স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:
বাংলাদেশের রাজস্ব ব্যবস্থায় কাঙ্ক্ষিত সংস্কার ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে এক হাজার কোটি টাকার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। এই অর্থে নেওয়া হচ্ছে ‘অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সংগ্রহের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ’ শীর্ষক একটি নতুন প্রকল্প। যার মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১,০০৯ কোটি ২০ লাখ টাকা। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক দেবে এক হাজার কোটি ৪০ লাখ টাকা এবং সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে দেবে ৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) ইতোমধ্যে ঋণ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের অধীন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। চলতি বছর শুরু হয়ে এটি শেষ হবে ২০৩০ সালের জুনে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের পাবলিক রিলেশন প্রধান মেহেরিন এ মাহবুব জানান, গত ১২ জুন সরকারি খাতের স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে ২৫ কোটি ডলারের একটি ঋণ অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংক বোর্ড, যার আওতায় এনবিআর সংস্কার প্রকল্পটিও রয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে কর-জিডিপি অনুপাত বিশ্বের মধ্যে সর্বনিম্ন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তা দাঁড়িয়েছে মাত্র ৭.৪ শতাংশে। এই প্রেক্ষাপটে রাজস্ব সংগ্রহে সরকারের চিহ্নিত তিনটি বড় চ্যালেঞ্জ হলো—
১. বাণিজ্য করের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা
২. অসংখ্য ছাড় ও সীমিত হারের কারণে ভ্যাট ব্যবস্থা অকার্যকর হওয়া
৩. আয়কর খাতে অতিরিক্ত ছাড় ও কর অবকাশ সুবিধা
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে এনবিআরের যে সংস্কার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে তার আওতায় থাকবে—
-
এনবিআরের দক্ষতা বৃদ্ধিতে বিজনেস প্রসেস ও পরিবর্তন ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা
-
গবেষণা, পরিসংখ্যান ইউনিট গঠন এবং নীতি বিশ্লেষণ সক্ষমতা বাড়ানো
-
আয়কর ও ভ্যাট প্রশাসনের ডিজিটাল রূপান্তর
-
ই-আনভয়েসিং ও ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম তৈরি
-
কল সেন্টার ও ইউনিক আইডি নম্বর ব্যবস্থা চালু
-
আধুনিক ভ্যাট সফটওয়্যার (IVAS) ও কাস্টমস সিস্টেম উন্নয়ন
-
আয়কর প্রশিক্ষণ একাডেমি গঠনের জন্য সমীক্ষা
পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ড. কাইয়ুম আরা বেগম বলেন, এনবিআরের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে রাজস্ব সংগ্রহে কাঙ্ক্ষিত উন্নতি হবে। একইসঙ্গে প্রয়োজনীয় কাঠামোগত সংস্কার বাস্তবায়নেও এই প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।