জুলাই যোদ্ধাদের সম্মান এখন সময়ের দাবি: রিজভী

স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক: 

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) চলতি বছরের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি পালনে দেশজুড়ে ৩৬ দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী ১ জুলাই রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে একটি আলোচনা সভা ও শহীদ পরিবারের সম্মানে বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। এতে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত থাকবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান

শনিবার দুপুরে অনুষ্ঠানস্থল পরিদর্শন শেষে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন,

“আমরা জুলাই বিপ্লবের শহীদ ও যোদ্ধাদের সঠিক মর্যাদা দিতে চাই। এই জুলাই-আগস্টেই তাদের সম্মান জানাতে হবে।”

তিনি আরও বলেন,

“যাদের সন্তানেরা গণতন্ত্র ফেরানোর লড়াইয়ে জীবন দিয়েছেন, তাদেরকে জাতির পক্ষ থেকে যথাযথ সম্মান জানানো উচিত। সেই প্রত্যয়ে আমাদের কর্মসূচি সাজানো হয়েছে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে সারাদেশে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে জুলাই আন্দোলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।”

রিজভী বলেন,

“জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান কেবল একটি সময়কাল নয়, এটি জাতির গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার গর্বের অংশ। আমরা এর প্রথম বর্ষপূর্তি স্মরণীয় করে রাখতে চাই। আমাদের স্বপ্ন, এমন একটি বাংলাদেশ গড়া, যেখানে জনগণ নিরাপদে এবং মর্যাদার সঙ্গে বসবাস করতে পারবে।”

অর্থনীতি ও গণতন্ত্র নিয়ে উদ্বেগ

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বর্তমান সরকার ও অর্থনীতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন,

“দেশে মব কালচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গণতন্ত্র ও আইনের শাসন অনুপস্থিত। প্রবৃদ্ধি ৪.২ থেকে কমে ৩.৯ এ নেমে এসেছে। সরকারকে এই অর্থনৈতিক সংকট দেখার আহ্বান জানাচ্ছি।”

তিনি নির্বাচনের তারিখ দ্রুত ঘোষণা করার আহ্বান জানিয়ে বলেন,

“আমরা যৌক্তিকভাবে সমালোচনা করবো, সেটি আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। আশা করি, নির্বাচন কমিশন দ্রুত একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের রূপরেখা দেবে।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন,

“বিগত অগণতান্ত্রিক সরকার নির্বাচন কমিশন, মিডিয়া এবং অন্যান্য গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে। তারা প্রকৃত অর্থে জনগণের ভোটাধিকার চায়নি।”

‘তারেক রহমান আন্দোলনের অনুপ্রেরণা’

বিএনপি নেতারা বলেন, তারেক রহমান গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে জাতিকে উদ্বুদ্ধ করতে ভূমিকা রেখে চলেছেন। জুলাই বিপ্লবের স্মৃতি ও তাৎপর্য তুলে ধরতে যেসব শহীদ ও আহত আছেন, তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য দলের পক্ষ থেকে কমিশন বা সংগঠনের মাধ্যমে সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়।

শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানির বক্তব্য

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন,

“জুলাই বিপ্লবকে স্মরণীয় করে রাখতে আমরা মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী আমরা চাই শেখ হাসিনার বিচার কাজ শুরু হোক এবং একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হোক।”

তিনি আরও বলেন,

“আমরা শহীদ ও আহত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। এটি আমাদের নৈতিক ও রাজনৈতিক দায়িত্ব।”

ভেন্যু পরিদর্শনে কেন্দ্রীয় নেতারা

অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি পরিদর্শনে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি পালন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রশিদ হাবিব, ড. মাহদী আমিন, ড. তৌফিকুল ইসলাম মিথিল, আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, ফারজানা শারমিন পুতুল প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *