স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার ব্যবসায়ী ও বিএনপির সক্রিয় কর্মী নাসির মিয়াকে ঢাকায় ডিবি কার্যালয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে অমানুষিক নির্যাতন এবং ৫ লাখ ৭৪ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (২৯ জুন) সুনামগঞ্জ শহরের এক রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তিনি। অভিযোগে বলা হয়, শতকোটি টাকার যাদুকাটা-১ বালুমহাল ইজারা নিয়ে বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে এই ঘটনা ঘটে।
নাসির মিয়া তাহিরপুর উপজেলার দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের হলহলিয়া গ্রামের আকতার হোসেনের ছেলে এবং স্থানীয় বিএনপির একজন সক্রিয় কর্মী। তিনি বলেন, যাদুকাটা-১ বালুমহাল তিনি নিয়ম মেনে বৈধভাবে ইজারা নেন। কিন্তু সাবেক ইজারাদার ও আওয়ামী ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত রতন মিয়া এ বিষয়ে হাইকোর্টে মামলা করে এবং ইজারার কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ আনেন।
এদিকে কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমানও ওই বালুমহালে অংশ দাবি করেন। অন্য পক্ষের মধ্যস্থতায় নাসির তাকে ৩০ শতাংশ শেয়ার দিতে রাজি হন। এর পরও মাহবুব হাইকোর্টে পৃথক মামলা দায়ের করেন।
নাসির অভিযোগ করেন, গত ২৫ জুন হাইকোর্টে ওই মামলা পরিচালনার জন্য তিনি ঢাকায় যান। সেখানে রতন মিয়া, মাহবুবুর রহমান, ফেরদৌস আলম ও খোরশেদ আলমের সহায়তায় কয়েকজন সাদা পোশাকধারী ডিবি সদস্য তাকে মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয়ে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে মারধর করা হয় এবং মামলা না চালানোর জন্য চাপ দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “ডিবি অফিসে নিয়ে গিয়ে আমাকে ভয়ভীতি দেখানো হয়, বলা হয় যদি হাইকোর্টে মামলার পেছনে যাই, তাহলে তুলে নিয়ে গুম করে ফেলা হবে। এরপর মাহবুবুর রহমান এসে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। একপর্যায়ে ডিবি সদস্যদের সামনেই আমার কাছ থেকে ৫ লাখ ৭৪ হাজার টাকা নিয়ে যান।”
নাসির মিয়া আরও বলেন, ওই সময় একটি সাজানো মুচলেকায় তাকে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করা হয়, এরপর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনার পর তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও উল্লেখ করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসেন বলেন, “ডিবি পুলিশ কোনো ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করেছে এমন তথ্য আমাদের কাছে নেই। তবে অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখা হবে।”
ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। নাসিরের সমর্থকরা অবিলম্বে তদন্ত ও দায়ীদের শাস্তি দাবি করেছেন। এলাকাজুড়ে বিষয়টি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।