কেরু এন্ড কোম্পানির এমডি রাব্বিক হাসানের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে সুনাম ক্ষুণ্ণের অপচেষ্টা 

এইচ এম হাকিম:


বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের অধীনে পরিচালিত দেশের একমাত্র লাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠান—কেরু এ্যান্ড কোম্পানি (বিডি) লিমিটেড। এক সময় নানা অনিয়ম ও সিন্ডিকেটের অভিযোগে জর্জরিত এই প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে দৃশ্যমান পরিবর্তনের পথে হাঁটছে। এই পরিবর্তনের মূল কারিগর হিসেবে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রাব্বিক হাসানের নাম এখন উচ্চারিত হচ্ছে।

২০২৩ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কেরু এন্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন রাব্বিক হাসান। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তিনি প্রতিষ্ঠানটিকে দুর্নীতি ও অনিয়মমুক্ত একটি লাভজনক শিল্পে পরিণত করার জন্য বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন। টেন্ডার সিন্ডিকেট, চিনি চুরির অভিযোগ, শ্রমিক অসন্তোষ ও প্রশাসনিক দুর্বলতা—এসব কাটিয়ে কেরুকে তিনি এনে দিয়েছেন একটি স্থিতিশীল ও উন্নয়নমুখী চেহারা।

দৃশ্যমান উন্নয়ন: ডিস্টিলারির আধুনিকীকরণ থেকে লাভ বৃদ্ধি পর্যন্ত

কেরু এন্ড কোম্পানির ডিস্টিলারি ইউনিটে মদ চুরি রোধে ইতোমধ্যে আধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, সীমানা প্রাচীরের উপরে কাঁটাতার, গেট নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, নেটের বেড়া ও অতিরিক্ত নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েন করে চুরি প্রতিরোধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হয়েছে।

এছাড়া রাসায়নিক ও জৈব সার ইউনিটের উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি, রিকভারি বাড়ানোর মাধ্যমে কোম্পানিটির মুনাফা বৃদ্ধি পেয়েছে। কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের মধ্যে বর্তমানে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজ করছে, যা প্রতিষ্ঠানিক স্থিতিশীলতার বড় নিদর্শন।

মিথ্যা অপপ্রচারে ব্যস্ত সুবিধাবাদী মহল

বর্তমান এমডির কৌশলী ও দুর্নীতিমুক্ত নেতৃত্বকে মেনে নিতে পারছে না পূর্বের সুবিধাভোগী সিন্ডিকেট। তারা নানা উপায়ে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য সাংবাদিকদের কাছে সরবরাহ করে কোম্পানির সুনাম ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের কুপ্রচারের মাধ্যমে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অপচেষ্টা গণমাধ্যমের জন্যও লজ্জাজনক। সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে যথাযথ যাচাই-বাছাই না করে এ ধরনের মিথ্যা প্রচার জনস্বার্থে হুমকি স্বরূপ।

নতুন প্রকল্প ও উদ্যোগ

রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশন (BNACWC)-এর সুপারিশ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে শিল্প উপদেষ্টা, শিল্প সচিব ও বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যানের নির্দেশনায় ডিস্টিলারি ইউনিটে CS বোটলিং কার্যক্রম চালু করা হয়েছে।

কান্ট্রি লিকার উৎপাদনের জন্য মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অনুমোদনক্রমে বিভিন্ন আবেদন ও লাইসেন্স প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।

নতুন অটোমেশন মেশিনারিজ ক্রয়ের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। লিকার পণ্যগুলোর ব্যাচ নম্বর অনুযায়ী রাসায়নিক পরীক্ষাগারের মাধ্যমে মান যাচাই ও বাজারজাতকরণ করা হচ্ছে।

কেরু এন্ড কোম্পানির কৃষি খামারের জমিগুলো স্বচ্ছভাবে টেন্ডার আহ্বানের মাধ্যমে সল্পমেয়াদী ফসলের জন্য ইজারা দেওয়া হয়েছে, যেখানে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের কোনো ব্যক্তিগত সম্পৃক্ততা নেই।

সততার পুরস্কার: লাভের শীর্ষে কেরু

বর্তমানে কেরু এন্ড কোম্পানি যে গতিতে এগোচ্ছে, তাতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এটি অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জন করতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পের খাতায় এটি একটি অনন্য দৃষ্টান্ত হতে পারে।

উপসংহার

রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে যখন সুশাসন, সততা ও দৃঢ় নেতৃত্বের সংকট দেখা যায়, তখন কেরু এন্ড কোম্পানির বর্তমান রূপান্তর একটি বড় দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে। রাব্বিক হাসানের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানটি ঘুরে দাঁড়িয়েছে—এটি একদিকে যেমন রাষ্ট্রীয় সম্পদের সুরক্ষা নিশ্চিত করছে, অন্যদিকে তেমনি জাতির আস্থাও পুনরুদ্ধার করছে। এখন প্রয়োজন গণমাধ্যমসহ সব মহলের দায়িত্বশীল আচরণ, যাতে সত্য প্রতিষ্ঠিত হয় এবং মিথ্যা অপপ্রচার ব্যর্থ হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *