খসরু মৃধা:
গাজীপুর মহানগরের পূবাইল এলাকায় থানা পুলিশের নাম ভাঙিয়ে গাঁজা সেবন মামলার এক আসামিকে ছাড়িয়ে দিতে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ কর্মী এবং এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ভুক্তভোগীর পরিবারের কাছ থেকে মোট ১৪ হাজার টাকা আদায় করা হয়—এর মধ্যে আওয়ামী লীগ কর্মী বাচ্চু মিয়া নেন ১০ হাজার এবং এক সাংবাদিক নেন ৪ হাজার টাকা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত বাচ্চু মিয়া গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৪১নং ওয়ার্ডের উধুর এলাকার বাসিন্দা লেহাজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি একাধিক সময় আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী হিসেবে নির্বাচনকেন্দ্রিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন। এমনকি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্থানীয় এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর হয়ে কেন্দ্র কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন বলে জানান এলাকাবাসী।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ জুন সন্ধ্যার পর পূবাইল পোস্ট অফিস এলাকা থেকে অর্পণ চন্দ্র দাস নামে এক যুবককে গাঁজাসহ আটক করেন পূবাইল থানার এসআই নাসির উদ্দিন। পরদিন ২৬ জুন তাকে প্রিসন ভ্যানযোগে গাজীপুর আদালতে পাঠানো হয়।
অর্পণের বড় ভাই রতন চন্দ্র দাস জানান, “আমার ভাইকে আটক করার পর বাচ্চু মিয়া এসে বলেন, ‘থানায় মামলা না দিতে চাইলে ১৪ হাজার টাকা লাগবে—পুলিশ ও উকিলকে দিতে হবে।’ বাধ্য হয়ে আমাদের মা সেই টাকা সংগ্রহ করে বাচ্চু মিয়ার হাতে দেন। পরে বাচ্চু মিয়া তার মধ্যে ১০ হাজার টাকা রেখে, বাকি ৪ হাজার টাকা স্থানীয় সাংবাদিক রবিউলকে দেন বলে জানান—যিনি থানার এসআই নাসির উদ্দিনের নাম ভাঙিয়ে মামলা ‘হালকা’ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।”
এ বিষয়ে এসআই নাসির উদ্দিন বলেন, “আমার সঙ্গে কোনো আর্থিক লেনদেন হয়নি। যদি কেউ আমার নাম ব্যবহার করে টাকা নিয়ে থাকে, তাহলে উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পূবাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম আমিরুল ইসলাম বলেন, “অনেকে পুলিশের নাম ভাঙিয়ে নানা কাজ করে থাকে। তবে এই ঘটনায় যেহেতু একটি আওয়ামী লীগ কর্মীর নাম এসেছে, আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেব।”
ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা অভিযোগ করে বলেন, “এখনো আওয়ামী দোসররা পুলিশ প্রশাসনের নাম ব্যবহার করে দালালি করছে—এদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা জরুরি।”