আব্দুর রহিম জয়
বগুড়ায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম ভাঙিয়ে প্রতারণা করার অভিযোগে এক প্রতারককে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। নিজেকে ‘ব্যারিস্টার শামীম রহমান’ পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা চালিয়ে যাওয়া ওই ব্যক্তি অবশেষে ধরা পড়েছেন পুলিশের বিশেষ অভিযানে।
ডিবি সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত প্রতারকের নাম শামীম রহমান (৩৩)। তিনি নিজেকে তারেক রহমানের চাচাতো ভাই এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে প্রভাবশালী নেতা বলে পরিচয় দিতেন। শুধু তাই নয়, তিনি বিএনপির বিভিন্ন পদ পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করে আসছিলেন।
ঘটনার সূত্রপাত হয় বগুড়া সদর থানায় হারুন-উর-রশিদ নামের এক ভুক্তভোগীর করা অভিযোগের ভিত্তিতে। অভিযোগে তিনি জানান, কিছুদিন আগে ঢাকায় বিএনপি কার্যালয়ের সামনে পরিচিত দুই ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন শামীম রহমান। আলাপচারিতার একপর্যায়ে শামীম নিজেকে ব্যারিস্টার হিসেবে পরিচয় দিয়ে দাবি করেন, তিনি তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। পরে তিনি যুবদলের কেন্দ্রীয় এবং জেলা পর্যায়ে পদ পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা দাবি করেন।
এর ধারাবাহিকতায় গত ২২ জুন বগুড়ার মম-ইন কফি শপের সামনে সাক্ষীদের সঙ্গে দেখা করে তিনি এক ব্যক্তির কাছ থেকে কেন্দ্রীয় যুবদলের পদ পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাসে দুই লাখ টাকা এবং আরেকজনের কাছ থেকে জেলা যুবদলের পদ দেওয়ার আশ্বাসে এক লাখ টাকা দাবি করেন। ওইদিন তিনি নগদ ৫০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন।
পরবর্তীতে ভুক্তভোগীরা বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে নামলে বেরিয়ে আসে, তারেক রহমানের কোনো আত্মীয়স্বজনের তালিকায় শামীম রহমান নামে কেউ নেই। এমনকি তার বিরুদ্ধে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রতারণার একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
এই ঘটনায় বগুড়া সদর থানায় ৩ জুলাই মামলা নম্বর-০৯, ধারা ৪১৯/৪২০ অনুযায়ী প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার পরপরই পুলিশ সুপার মো. সাদেকুল ইসলাম এর নির্দেশনায় এসআই মো. আবু জাফর এবং এসআই মো. জাহাঙ্গীর কবিরের নেতৃত্বে ডিবির একটি টিম ঢাকার উত্তরা পূর্ব থানাধীন ৪ নম্বর সেক্টরের মাটির মসজিদ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অভিযুক্ত শামীম রহমানকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে একাধিক মোবাইল ফোন, বিভিন্ন মোবাইল অপারেটরের সিম কার্ড, চারটি ব্যাংকের এটিএম কার্ড এবং দশটি স্বাক্ষরিত ফাঁকা চেক উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শামীম রহমান প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, তার বিরুদ্ধে অতীতেও ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে উচ্চপদস্থ রাজনৈতিক নেতা, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রতারণা করার অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে আরও ভুক্তভোগীদের খোঁজে মাঠে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।