স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:
সম্প্রতি গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক উমামা ফাতেমা দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তার বক্তব্যে উঠে এসেছে যে, ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে বিশাল পরিবর্তন ও সংস্কারের স্বপ্ন দেখা হয়েছিল, তা আজকের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কর্মকাণ্ডে বাস্তবায়নের খুব কমই ছোঁয়া গেছে। তিনি বলেন, দেশের মানুষের প্রত্যাশিত সেই পরিবর্তনগুলো এখনও দূরদর্শী স্বপ্ন হিসেবেই থেকে গেছে।
উমামা ফাতেমা বলেন, ‘ছাত্রদের আন্দোলনে জনগণ যে স্বপ্ন দেখেছিল, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের কাছাকাছিও আমরা এখন নেই। জুলাই মাসে আন্দোলনের সময় ছাত্ররা যখন দেশের ভবিষ্যত বদলের আহ্বান জানাচ্ছিল, তখন তাদের হাতে থাকা ক্ষমতা ধীরে ধীরে সরকার নেয় নিয়েছে। এখন ছাত্রদের হাতে আন্দোলনের কোনো শক্তি নেই।’
তিনি আরও জানালেন যে, সরকার একটি ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’ গঠন করে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে কিছু সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য। তবে এখানে মূল বিষয় হলো, এই সংস্কারগুলো এমন হবে যা সব রাজনৈতিক দল সমর্থন করবে। উমামা ফাতেমা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘যদি শেষ পর্যন্ত পুরো গণঅভ্যুত্থান রাজনৈতিক দলগুলোর হাতে চলে যায়, তাহলে সাধারণ মানুষের লাভ কী?’
উমামা ফাতেমা মনে করেন, জুলাইয়ের সময় কিছু ঐতিহাসিক ভুল ছিল, যা বর্তমান পরিস্থিতিকে জটিল করেছে। সেই ভুলগুলো জাতীয় ঐকমত্য ও সংস্কারের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে তিনি আশাবাদী, ‘জুলাই বেঁচে থাকবে শুধু যদি পরিবর্তন আসে, যদি বাংলাদেশ আগামী দিনে ঐ সংস্কারগুলো পুনরুজ্জীবিত করতে পারে।’ তিনি মনে করেন, আগামী ১০ বা ২০ বছরের মধ্যে যদি জুলাই আন্দোলন দেশের জন্য কাঙ্ক্ষিত কোনো পরিবর্তন নিয়ে না আসে, তাহলে এটি টিকে থাকতে পারবে না।
তিনি দেশের সাধারণ মানুষকে পুনরায় আন্দোলনে নামার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে পান বিক্রেতা, চা বিক্রেতা এবং মিরপুর ১০ এর হকাররা সেই স্বপ্ন নিয়ে রাস্তায় নেমেছিল। তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে হলে এখন দেশের জনগণকে আবার একসাথে হতে হবে এবং মাঠে নামতে হবে।’
উমামা ফাতেমার এ বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, তিনি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গতিবিধি ও উদ্যোগ নিয়ে নিন্দা প্রকাশ করছেন এবং গণঅভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য গণমানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণই একমাত্র পথ মনে করছেন।