অসহায় নুরুল ইসলামের পরিবারের উপর হামলা ও মিথ্যা মামলার অভিযোগ

কামরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম:

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আওয়ামী লীগ কর্মী পরিচয়ধারী সন্ত্রাসী চক্র ‘হেলাল গং’-এর বিরুদ্ধে এক অসহায় পরিবারের ওপর ধারাবাহিক হামলা, ভাঙচুর এবং মিথ্যা মামলার অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী নুরুল ইসলামের পরিবার।

আহতদের পক্ষে নুরুল ইসলামের পুত্র আক্তার হোসেন (৩৫), পশ্চিম আমিরাবাদ খৈয়ারকুল উদ্যামাথার পাড়ার বাসিন্দা, জানান— দীর্ঘদিন ধরে পৈতৃক সম্পত্তি জবরদখলের জন্য হেলাল গং নানা রকম হয়রানি চালিয়ে আসছে। এর অংশ হিসেবে তার পরিবারকে টার্গেট করে একের পর এক মিথ্যা মামলা এবং হামলার মাধ্যমে শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়।

গত ১৩ আগস্ট ২০২৪ তারিখে, আক্তার হোসেন স্থানীয় শিমুল বড়ুয়ার চায়ের দোকানে কারিগর হিসেবে কাজ করার সময় হেলাল গং তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। খবর পেয়ে ভাই রনি ও মামুন এগিয়ে এলে তাদের ওপরও হামলা করা হয়। হামলায় জড়িত ছিল মো. হেলাল উদ্দিন (৩৪), শাহাদাত হোসেন (৩০), জামাল হোসেন (৪০), জাফর আলম (৪৩), উমর ফারুক (৩৭) এবং আরও কয়েকজন অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসী।

আক্তার হোসেন গুরুতর আহত অবস্থায় লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার পর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন এবং সেখানেই ১৭ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন।

পরবর্তীতে সুস্থ হয়ে ফিরে এসে ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে তিনি লোহাগাড়া থানায় ১৬/২৪ নম্বরে একটি মামলা করেন। এতে আসামিদের মধ্যে হেলালকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তবে হেলাল গং ১১ সেপ্টেম্বর পাল্টা মিথ্যা মামলা দায়ের করে বলে অভিযোগ উঠেছে।

অন্যদিকে, ৩ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে হেলাল, শাহাদাত ও আমির হোসেনের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা নুরুল ইসলামের বসতঘরে হামলা চালায় এবং ব্যাপক ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ করেন মামুন। তিনি এই ঘটনায় থানায় জিডি করেন (নম্বর: ১১২)।

সবচেয়ে সাম্প্রতিক ঘটনায়, ৩ জুলাই ২০২৫ তারিখে ফাতেমা জোহরা মাদ্রাসার পাশে আব্দুল মোমেনের দোকানে চা খাওয়ার সময় আক্তার হোসেন, মামুন ও তাদের সঙ্গীদের ওপর ফের হামলা চালায় হেলাল গং। প্রায় ১৫-২০ জনের সন্ত্রাসী দল দেশীয় অস্ত্রসহ উপস্থিত হয়ে এ হামলা চালায়। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ভুক্তভোগীরা প্রাণে বাঁচেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ— হেলাল গং রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থেকে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে। তারা যেই সরকারই ক্ষমতায় থাকুক না কেন, সেই দলের ছত্রছায়ায় থেকে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে।

স্থানীয়রা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, হেলাল গংয়ের জামিন বাতিল করে তাদের দ্রুত গ্রেফতার করা না হলে এলাকায় বড় ধরনের সহিংসতা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *