মোঃ আনজার শাহ:
অবিরাম বর্ষণ, পিচ্ছিল কাদামাখা পাহাড়ি পথ—সব প্রতিকূলতাকে অগ্রাহ্য করে বিএনপির শীর্ষ নেতা রুহুল কবির রিজভী পৌঁছে গেলেন জাতীয় নারী ফুটবল দলের গর্ব ঋতুপর্ণা চাকমার ঘরে। শুধুই সৌজন্য সাক্ষাৎ নয়—এই সফর হয়ে উঠল হৃদয়ের বন্ধন আর পাহাড়-সমতলের ঐক্যের প্রতীক।
রাঙামাটির এক প্রত্যন্ত চাকমা পাড়ায় রিজভীর উপস্থিতি যেন এক আবেগঘন মুহূর্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে পাহাড়ি জনপদজুড়ে। বিভিন্ন জাতিসত্তার মানুষ—চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা সহ আরও অনেকে উৎসবের আমেজে স্বাগত জানান রিজভীকে। পাহাড়ি সংস্কৃতি ও আতিথেয়তায় যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে যান তিনি।
ঋতুপর্ণা চাকমার পরিবারের খোঁজখবর নেওয়ার পাশাপাশি রিজভী স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তিনি বলেন, “পাহাড়ের সন্তানরা আমাদের জাতীয় গর্ব। যারা দেশের পতাকাকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরে, তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব।”
স্থানীয়রা রিজভীর এমন আন্তরিক উপস্থিতিকে “অসাধারণ মানবিকতা” বলে অভিহিত করেছেন। অনেকের মতে, এটি শুধুই রাজনৈতিক সফর নয়—এটি ছিল সম্মান, সহমর্মিতা আর ভালোবাসার নিঃস্বার্থ প্রকাশ।
ঋতুপর্ণা চাকমা আবেগভরা কণ্ঠে বলেন, “আমি শুধু একজন ক্রীড়াবিদ নই, আজ আমি আমার পাহাড়ি পরিচয়ে সম্মানিত বোধ করছি। রিজভী স্যারের আগমন আমাদের জন্য এক অনন্য অনুপ্রেরণা।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এ সফর বিএনপির পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে একটি তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ। দীর্ঘদিন ধরে মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি পাহাড়ি জনগণের বিমুখতার পটভূমিতে রিজভীর এ প্রয়াস নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে।
বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পাহাড়ি অঞ্চলের উন্নয়ন, শিক্ষা ও খেলাধুলার প্রসারে দল অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করে যাবে।
এই সফর প্রমাণ করল—রাজনীতি মানে শুধু শহরের কনফারেন্স রুমে আলোচনায় সীমাবদ্ধ থাকা নয়; রাজনীতি মানে মানুষের দুয়ারে গিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ানো, ভালোবাসা দেওয়া এবং সম্মান জানানো।
রিজভীর এই পাহাড়ি যাত্রা সেই সত্যিকারের জনসম্পৃক্ত, হৃদয়স্পর্শী রাজনীতিরই এক উজ্জ্বল নিদর্শন।