স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, তারা যেন মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত একজন ব্যক্তির বিষয়ে বিবেক ও নৈতিক স্পষ্টতা নিয়ে দায়িত্বশীল পদক্ষেপ গ্রহণ করে। বুধবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ সরকার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যার্পণের জন্য যে আইনগত অনুরোধ পাঠিয়েছে, তা ভারত অগ্রাহ্য করেছে, যা আর গ্রহণযোগ্য নয়।
তিনি জানান, আঞ্চলিক সম্পর্ক, কৌশলগত হিসাব কিংবা রাজনৈতিক সুবিধা কখনোই বেসামরিক নাগরিকদের পরিকল্পিত হত্যার জন্য অজুহাত হতে পারে না। তিনি বলেন, “যখন বিবিসির মতো একটি বিশ্বখ্যাত গণমাধ্যম বাংলাদেশে সংঘটিত অপরাধের তদন্তে তাদের সর্বোচ্চ সক্ষমতা কাজে লাগায়, তখন বিশ্বকে সেই তথ্য গ্রহণ করতেই হয়।”
শফিকুল আলম আরও জানান, বিবিসির অনুসন্ধানী ইউনিট নিশ্চিত করেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৪ সালের ছাত্র বিক্ষোভ দমন অভিযানে সরাসরি রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট হত্যাকাণ্ডে জড়িত। তাদের প্রকাশিত অডিও ও ভিডিও প্রমাণ এসব তথ্যের যথার্থতা প্রমাণ করে। তিনি বলেন, “সাধারণ মানুষের অভিযোগ আলাদা কথা, কিন্তু বিবিসির মতো স্বনামধন্য, ফরেনসিক ও তদন্ত দক্ষতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান যখন স্বাধীনভাবে তদন্ত করে তা অকাট্য প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরে, তখন বিষয়টির গুরুত্ব অনেক বেড়ে যায়।”
প্রেস সচিব বলেন, “ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ড, যা আন্তর্জাতিক ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা যাচাই করেছেন, তা প্রমাণ করে যে সহিংসতা ছিল একেবারেই পূর্বপরিকল্পিত এবং অনুমোদিত হত্যাকাণ্ড, দুর্ঘটনাবশত নয়।”
তিনি বলেন, “এখন আর এসব প্রমাণ শুধু গল্প কিংবা পক্ষপাতিত্বের ওপর নির্ভর করে নেই; এগুলো ফরেনসিক ও যাচাইযোগ্য তথ্য, যা উপেক্ষা করার উপায় নেই।” শফিকুল আলম আরও বলেন, “যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান যারা এই বর্বরতার সত্য উন্মোচন করেছে, তারা বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধু হওয়ায় ভারতকেও এই গুরুত্ব বুঝতে হবে। তারা যেন ন্যায়বিচার, আইনের শাসন ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে।”
শেষে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছে, আর ভুক্তভোগীরা প্রত্যাশা করে তাদের বিচার হবে। বিশ্বকে দেখাতে হবে যে, কোনো নেতা যতই ক্ষমতাশালী হোক, আইনের ঊর্ধ্বে নয়।”