মোঃ আনজার শাহ:
সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে আলোচিত পারিবারিক বিরোধ ও আইনি লড়াইয়ের ঘটনায় দেশের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে তীব্র বিতর্ক। আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন ইংরেজি মাধ্যমে পড়ুয়া তরুণী মেহরীন আহমেদ, যিনি ব্যক্তিগত বিরোধে মা-বাবার বিরুদ্ধেই আইনি পদক্ষেপ নিয়েছেন। এই ঘটনাকে ঘিরে যখন চলছে নানা মতভেদ ও সমালোচনা, তখন এক ব্যতিক্রমী দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সামনে এলেন দেশের প্রথিতযশা ইসলামি চিন্তাবিদ ও খতিব শায়খ আহমাদুল্লাহ।
সোমবার (১৪ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক হৃদয়ছোঁয়া বার্তায় তিনি লেখেন,
“এই বৃষ্টিস্নাত দিনে আলোচিত সেই মেয়েটির মা-বাবার কথা ভাবছি। হয়তো তারা সন্তানকে বড় করেছেন সব আবেগ, মমতা আর ভালোবাসা দিয়ে। কিন্তু সেই সন্তানই একদিন তাদের আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে—এটা কি তারা কল্পনাও করেছিলেন?”
তিনি ঘটনাটিকে কেবল ব্যক্তিগত একটি পারিবারিক সংকট হিসেবে দেখেননি বরং সেটিকে তুলে ধরেছেন আজকের প্রজন্মের মূল্যবোধের অবক্ষয়ের একটি প্রতিচ্ছবি হিসেবে।
“সন্তানদের আমরা নিজেরাই ভোগবাদী ও আত্মকেন্দ্রিক করে গড়ে তুলছি,”— মন্তব্য করেন শায়খ আহমাদুল্লাহ।
“ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার অভাবেই আজ তারা হয়ে উঠছে বেপরোয়া।”
তিনি আরও বলেন,
“এক সময় বাবা-মায়ের শাসনই ছিল আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় দিকনির্দেশনা। সেই ভিত্তির ওপরই দাঁড়িয়ে ছিল আমাদের সাফল্য। কিন্তু এখনকার প্রজন্ম সেই মূল্যবোধ ভুলে যাচ্ছে। এখনই যদি না সতর্ক হই, ভবিষ্যতে তার চেয়েও ভয়াবহ সামাজিক বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হবে আমাদের।”
এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি কেবল একজন মেয়ের আইনি সিদ্ধান্ত নয়, বরং গোটা সমাজ ও পরিবারব্যবস্থার দৃষ্টিভঙ্গি ও দিশাহীনতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।
শায়খ আহমাদুল্লাহর এই বার্তা যেন একটি আয়নার মতো। যেখানে আমরা দেখতে পাই—শুধু আইন নয়, প্রয়োজন হৃদয়ের শিক্ষা।
এই ঘটনা আমাদের নতুন করে ভাবতে শেখায়— সন্তান যেন মা-বাবার বিরুদ্ধে নয়, সমাজের জন্য দায়বদ্ধ এক নৈতিক মানুষ হয়ে ওঠে।