এইচ এম হাকিম:
দেশের একমাত্র মদ প্রস্তুতকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড। বিগত ১৭ বছরে কেরু অ্যান্ড কোম্পানিতে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম হলেও, বর্তমান কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাব্বিক হাসান দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বদলে গেছে কোম্পানিটির চিত্র। বিগত দিনগুলোতে যারা এই সরকারি প্রতিষ্ঠানটিতে দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের অধিকাংশ ছিল স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের পা চাটা গোলাম। দেশের একমাত্র লাভজনক শিল্প প্রতিষ্ঠানটিতে এমডি রাব্বিক হাসান দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই কেরু অ্যান্ড কোম্পানি লাভজনক খাতে পরিণত হয়েছে, বন্ধ হয়েছে লুটপাট এবং সিন্ডিকেট বাণিজ্য।
চুয়াডাঙ্গার দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি থেকে বাড়তি আর সুবিধা আদায় করতে না পারার কারণে, এক শ্রেণির স্বার্থবাদী মহল কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাব্বিক হাসানকে নিয়ে বিভিন্ন কল্পকাহিনি সাজিয়ে, মনগড়া মিথ্যা তথ্য সাংবাদিকদের মাঝে সরবরাহ করে কেরু অ্যান্ড কোম্পানির সুনাম নষ্ট করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাব্বিক হাসানকে নিয়ে যে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, সে সংবাদের কোনো সততা খুঁজে পাওয়া যায়নি। বরং সংবাদটি দেখে সাংবাদিকেরা রাব্বিক হাসানের সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের প্রমাণ পেয়েছেন। সংবাদটিতে উল্লেখ করা হয়েছে, কেরু অ্যান্ড কোম্পানির এমডি রাব্বিক হাসান এসি রুম থেকে বের হন না; বাস্তব চিত্রে দেখা যায়, প্রতিনিয়ত তিনি কোম্পানিটির উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করে যাচ্ছেন, যার কারণে তিনি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকদের কাছে প্রশংসিত।
কৃষকদের কাছে না যাওয়ার বিষয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, তিনি অফিসিয়াল কাজের পাশাপাশি কেরু অ্যান্ড কোম্পানির আখ চাষিদের কাছে গিয়ে সঠিক পরামর্শ প্রদান করে চলেছেন প্রতিনিয়ত। যার প্রমাণ হিসেবে কয়েকটি ফার্মের আখ চাষিদের সাথে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
রাব্বিক হাসানের নেতৃত্বে উন্নয়নের চিত্র এক নজরে দেখে আসি: এই বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠানটিতে বিগত দিনে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি, দায়িত্ব পালনে অবহেলা, ডিস্টিলারি থেকে মদ চুরি, এবং সিন্ডিকেট বাণিজ্যের অভিযোগ অনেক আগে থেকেই ছিল। গত বছরের ৫ই আগস্ট স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানির এমডি পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন রাব্বিক হাসান। মাত্র এক বছরেই তিনি কেরু অ্যান্ড কোম্পানির সব রকম অনিয়ম, সিন্ডিকেট টেন্ডার বাণিজ্য বন্ধ করেছেন। এই অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান গ্রহণের ফলে কোম্পানিটি আগের তুলনায় অনেক বেশি লাভজনক অবস্থানে পৌঁছেছে। সুগার মিলটির ডিস্টিলারি বিভাগের উন্নয়ন, শ্রমিক সংকট সমাধান, রাসায়নিক ও জৈব কারখানার উন্নয়নসহ বেশ কিছু দৃশ্যমান কাজ করে প্রশংসায় ভাসছেন এমডি রাব্বিক হাসান।
কেরু অ্যান্ড কোম্পানি বিডি লিমিটেডে এই সব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সহ্য করতে না পারা সিন্ডিকেট সদস্যরা বর্তমান এমডি রাব্বিক হাসানের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা আদায় করতে না পারায় তাঁকে গণমাধ্যমে হেয় করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
এ বিষয়ে কেরু অ্যান্ড কোম্পানিতে খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশন (BNACWC) এর সুপারিশ বাস্তবায়নে মাননীয় শিল্প উপদেষ্টা, শিল্প সচিব এবং বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যানের (গ্রেড-১) নির্দেশ অনুযায়ী, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (DNC) অনুমোদনক্রমে কেরু অ্যান্ড কোম্পানি (বিডি) লিমিটেডে সিএস বোটলিং কার্যক্রম চালু করা হয়েছে (কপি সংযুক্ত-৩)।
কান্ট্রি লিকার বোটলিং লাইসেন্সের জন্য মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে আবেদন এবং ট্রেজারি চালান জমা দেওয়া হয়েছে। ডিস্টিলারি কারখানার আঙিনায় পৃথক বন্ডেড পণ্যগার স্থাপনের জন্য আবেদন ও ট্রেজারি চালান জমা দেওয়া হয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত আছে (কপি সংযুক্ত-২)।
কান্ট্রি লিকার উৎপাদন প্রক্রিয়ার জন্য নতুন অটোমেশন মেশিনারিজ ক্রয় প্রক্রিয়াটি বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের সদর দপ্তরের মাধ্যমে প্রক্রিয়াধীন। ফ্লো মিটার বা ফ্লো পরিমাপক যন্ত্র ও অটোমেশন স্থাপনের পূর্বে নিয়মমাফিক মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে অবহিত করা হবে।
আন্ডার প্রুফ দেশি লিকার সরবরাহে ব্যাচ নম্বর অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন রং, ব্যাচ নম্বর সংযুক্ত করে উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ করা হচ্ছে। ব্যাচ অনুযায়ী কেন্দ্রীয় রাসায়নিক পরীক্ষাগার থেকে টেস্ট রিপোর্ট গ্রহণ করে বাজারজাত করা হচ্ছে (কপি সংযুক্ত)।
ডিস্টিলারি কারখানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কর্তৃক নিযুক্ত (ডিও) এর বদলি বিষয়টি পুরোপুরি অধিদপ্তরের এখতিয়ারভুক্ত।
কেরু অ্যান্ড কোম্পানির কৃষি খামারের জমি স্বল্পমেয়াদি ফসলের জন্য উন্মুক্ত টেন্ডার পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এখানে মিষ্টি কুমড়া চাষের বিষয়টিতে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
কান্ট্রি লিকার তৈরির বোতল টেন্ডারের মাধ্যমে সঠিক নিয়মে ক্রয় করা হয়েছে।
কেরু অ্যান্ড কোম্পানির অন্যান্য মিলে পূর্বের সব বদলি শিল্প মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনে, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের সদর দপ্তরের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কয়েকটি বদলিও করা হয়েছে। ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের এখানে কোনো ভূমিকা নেই।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে মদ চুরির অভিযোগটি ভিত্তিহীন। সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের বেশিরভাগই বর্তমান কর্তৃপক্ষের সময়ে ঘটেনি। যেকোনো চুরির ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বর্তমান এমডির আমলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে, যেমন: সিসিটিভি স্থাপন, সীমানা প্রাচীরের ওপর কাঁটাতার বসানো, পেছনের দিকে কাঁটাতারের প্রাচীর নির্মাণ, জানালায় নেট বসানো, অতিরিক্ত নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ, বিভিন্ন খোলা স্থানে রেলগেটের মতো গেট স্থাপন, সীমানা সংলগ্ন গলি বন্ধকরণ ইত্যাদি।
কেরু অ্যান্ড কোম্পানি (বিডি) লিমিটেডে পূর্বের তুলনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বিভিন্ন পয়েন্ট সিসিটিভির আওতায় এসেছে। ডিস্টিলারি ইউনিটে রিকভারি বেড়েছে, চিনি কারখানার রিকভারি আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে। কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ায় জৈব সার ও ভিনেগার বিক্রি বেড়েছে। ফলে ইউনিটটি বিগত বছরের তুলনায় অধিক মুনাফা অর্জনে সক্ষম হবে। বর্তমানে শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজ করছে।
সর্বোপরি, কেরু অ্যান্ড কোম্পানির বর্তমান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানটি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সর্বোচ্চ লাভের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।