নাছিমা খাতুন সুলতানা:
নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার সমাজ কমলপুর গ্রামে চাঞ্চল্যকর এক হত্যা মামলার আসামি হয়ে দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছেন সাহেরা নামে এক তরুণী। অভিযোগ উঠেছে, পিতা জাহের উদ্দিন হত্যার ঘটনায় সাহেরাকে জড়ানো হলেও, ঘটনার সময় সে গ্রামে উপস্থিতই ছিল না। বর্তমানে মামলা থেকে রেহাই পেতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন সাহেরা ও তার পরিবার।
সূত্র জানায়, গত ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ইং তারিখ দিবাগত রাতে সাহেরার বাবা জাহের উদ্দিন খুন হন। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে লাশ উদ্ধার করে এবং পরদিন ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়।
এই ঘটনায় জাহের উদ্দিনের স্ত্রী বাদী হয়ে মোহনগঞ্জ থানায় শান্তু মিয়াসহ কয়েকজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। জমিজমা সংক্রান্ত পুরনো বিরোধ থেকেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে স্থানীয়রা দাবি করেন।
মামলার তদন্তে নেমে বেরিয়ে আসে আরও একটি পটভূমি। নিহত জাহের উদ্দিনের ভাই, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জানান, শান্তু মিয়াদের সঙ্গে তাদের দীর্ঘদিনের জমি বিরোধ চলছিল। সেই সূত্র ধরে গত ৯ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয় এবং এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। গুরুতর আহতদের মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শান্তু মিয়ার ভাই মারা যান।
ওই ঘটনায় শান্তু মিয়ার পরিবার থেকে পাল্টা মামলা দায়ের করা হয় জাহের উদ্দিনের ছেলে সাইকুলসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। পরবর্তীতে জাহের উদ্দিন হত্যাকাণ্ডে তার কন্যা সাহেরাকেও আসামি করা হয়।
তবে সাহেরা দাবি করছেন, হত্যাকাণ্ডের সময় তিনি এলাকাতেই ছিলেন না। মামলায় তাকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে জড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তার পরিবার। বর্তমানে একমাত্র সাহেরাই এই মামলার প্রধান আসামি হিসেবে রয়েছেন, যা নিয়ে এলাকায় নানা জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে। সাহেরার পরিবার বলছে, তারা ন্যায়বিচারের আশায় উচ্চমহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।