সাতক্ষীরায় সাংবাদিকদের উপর হামলায় জড়িত মাদকাসক্ত ও ভাড়াটিয়াদের গ্রেফতারের দাবিতে সাংবাদিক সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান

আব্দুর রশিদ, সাতক্ষীরা:

সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সদস্যদের উপর মাদকাসক্ত ও ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী কর্তৃক হামলার প্রতিবাদ এবং জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে সাংবাদিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় নিউ মার্কেট চত্বরে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়, যার অনুলিপি দেওয়া হয় স্বরাষ্ট্র ও তথ্য মন্ত্রণালয়ে।

সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাসেমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মমতাজ আহমেদ বাপী, সহ-সভাপতি আবুল কালাম, যুগ্ম সম্পাদক এম. বেলাল হোসাইন, সাংবাদিক গাজী ফরহাদ, আমিনুর রহমানসহ অন্যরা।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য হলো সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা। কিন্তু ২০২২ সালের পর থেকে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের স্থানীয় নেতাদের অনৈতিক হস্তক্ষেপে এর ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়ে। ফলে সৃষ্টি হয় অচলাবস্থা। বিগত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের পর কতিপয় ব্যক্তিবর্গ সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের অধিকাংশ সদস্যকে বাইরে রেখে একটি মনগড়া কমিটি গঠন করে এবং অসাংবাদিক ও সন্ত্রাসীদের নিয়ে প্রেসক্লাবে দখলদারিত্ব কায়েম করে। তারা পেশাদার সাংবাদিকদের প্রেসক্লাব ব্যবহারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।

এমন পরিস্থিতিতে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের অধিকাংশ পেশাদার সাংবাদিক সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে আবুল কাসেমকে সভাপতি ও আসাদুজ্জামানকে সাধারণ সম্পাদক করে কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়। গত ৩০ জুন উক্ত কমিটির সাধারণ সভায় অংশগ্রহণের জন্য সদস্যরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসক্লাবে যেতে চাইলে দখলদার কমিটির নেতা আবু সাঈদ ও আব্দুল বারী অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত বহিরাগত ও ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের দিয়ে হামলা চালায়। এতে কমপক্ষে ৩ জন গুরুতরসহ ১৫ জন সাংবাদিক আহত হন।

এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা বিভিন্ন জাতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়। সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব সদর থানা থেকে খুবই সন্নিকটে। সাধারণ সভার আগে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা চেয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন সংস্থায় চিঠি দেওয়া হয়। অথচ ৩০ জুন সাংবাদিকরা প্রশাসনের নিকট থেকে কোনোরূপ নিরাপত্তা পাননি। উল্টো ০১ জুলাই আহত ৩৭ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। এজন্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সাংবাদিকসহ বিভিন্ন সুধী মহলে ক্ষোভের সঞ্চার হয়।

বর্তমানে অধিকাংশ পেশাদার সাংবাদিক প্রেসক্লাবে যেতে পারেন না। প্রেসক্লাবের সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য একটি ভোটের পরিবেশ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন বক্তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *