সিদ্ধিরগঞ্জে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগে সহকারী সেটেলমেন্ট ও সার্ভেয়ার অবরুদ্ধ

আরিফ খান শুভ: 

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ডিজিটাল ভূমি জরিপ কার্যক্রমকে ঘিরে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগে সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার মো. মহসিন আলী সরদার ও সার্ভেয়ার নজরুল ইসলাম সরকারকে স্থানীয় ছাত্র ও এলাকাবাসী অবরুদ্ধ করেছে। বুধবার (২৩ জুলাই) দুপুরে হীরাঝিল এলাকার একটি স্কুলে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযোগ রয়েছে, ভূমি জরিপের নামে নানা জটিলতা দেখিয়ে স্থানীয়দের কাছ থেকে ৩০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ আদায় করা হয়েছে। অভিযোগকারীরা জানান, জমির কাগজপত্র ঠিক থাকলেও কর্মকর্তারা ‘সমস্যা’ দেখিয়ে টাকা দাবি করতেন।

অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ তুলতে স্থানীয় একটি মসজিদ থেকে মাইকিং করে ভুক্তভোগীদের ডাকা হয়। এরপর অনেকেই ঘটনাস্থলে এসে তাদের অভিযোগ জানান।

হীরাঝিল এলাকার বাসিন্দা অহিদুর রহমান বলেন, “ভূমি জরিপ ক্যাম্পে গেলে সহকারী সার্ভেয়ার নজরুল বলেন, আমার মূল দলিল না থাকায় কাজ হবে না। পরে তিনি ইঙ্গিত দেন টাকা দিলে কাজ হবে। বাধ্য হয়ে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিয়ে কাজ করাতে হয়।”

আরেক ভুক্তভোগী মোখলেছুর রহমান জানান, “জমির একটি অংশ নাকি অন্য কারও জমিতে পড়ে গেছে—এই অভিযোগ তুলে নজরুল বলেন, কাজ করতে হলে ১ লাখ টাকা লাগবে। শেষমেশ ৩০ হাজার টাকা দিয়েই কাজটি করিয়ে নিই।”

আমেনা বেগম নামে এক নারী ভুক্তভোগী বলেন, “আমি কিডনি রোগী। আমার ছেলেকে কাগজপত্র দিয়ে পাঠালে তাকে বলা হয়, আমাদের জায়গা কম আছে, এখন কাজ করতে হলে টাকা লাগবে। পরে টাকা দিতে রাজি হলে হারুন নামে একজন আমার বাসায় এসে ১০ হাজার টাকা নিয়ে যায়।”

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের এক ছাত্রনেতা আরাফাত বলেন, “আমার মামা এনায়েত হোসেনের কাছ থেকে ১৯ হাজার টাকা নিয়েছেন সার্ভেয়ার নজরুল। দীর্ঘদিন ধরে এমন অভিযোগ শোনা যাচ্ছিল, তাই আজ আমরা তাদের অবরুদ্ধ করেছি।”

এ বিষয়ে ডিজিটাল ভূমি জরিপের ঢাকা জোনের প্রধান মাহমুদ জামান জানান, “আমি ঘটনাটি শুনেছি। ইতোমধ্যে তদন্তের জন্য লোক পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তরা দোষী প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এমনকি গ্রেপ্তারও।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *