মাদরাসার ছাত্র হয়েও বিসিএস ক্যাডার মোঃ মোস্তফা কামালের গল্প যেন অনুপ্রেরণার পাঠ

মোঃ আনজার শাহ:

চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ মজিদিয়া কামিল মাদরাসার প্রাক্তন ছাত্র মোঃ মোস্তফা কামাল প্রমাণ করেছেন—মাদরাসার শিক্ষা পিছিয়ে পড়ার কোনো কারণ নয়; বরং এটি হতে পারে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছার সিঁড়ি।

শুধু মাদরাসা শিক্ষায় শিক্ষিত মোস্তফা কামাল ফাজিল (স্নাতক) ও দুই বছর মেয়াদি কামিল (স্নাতকোত্তর) কোর্স শেষ করে অংশ নেন ৩৬তম বিসিএস পরীক্ষায়। প্রথমে অনলাইন আবেদন থেকে শুরু করে পরবর্তী প্রতিটি ধাপ—প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায়—তাকে কেউ থামিয়ে দিতে পারেনি।

অথচ তার আশপাশের অনেকেই বলেছিলেন, “মাদরাসার সার্টিফিকেট দিয়ে কিছু হবে না! বিসিএসে বসার স্বপ্ন দেখাও ভুল।” কেউ কেউ বলেছিলেন, “ফাজিলে এক সাবজেক্ট, কামিলে আরেকটা! ভাইভাতে বাদ পড়বে!”

কিন্তু বাস্তবতা প্রমাণ করেছে সম্পূর্ণ ভিন্ন কিছু।

৩৬তম বিসিএসে তিনি হাদিস বিষয়ে প্রভাষক হিসেবে সুপারিশপ্রাপ্ত হন এবং কর্মজীবন শুরু করেন সিলেট সরকারি আলিয়া মাদরাসায়। পরবর্তীতে বদলি হয়ে যোগ দেন দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি মাদরাসা-ই-আলিয়া, ঢাকায়। বর্তমানে সেখানেই তিনি হাদিস বিষয়ে প্রভাষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

এই অর্জন কেবল ব্যক্তিগত নয়—এটি পুরো মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার এক উজ্জ্বল উদাহরণ। তিনি প্রমাণ করেছেন, মাদরাসার ফাজিল ও কামিল সনদ নিয়ে শুধুই পরীক্ষায় অংশ নেওয়া নয়, বিসিএস ক্যাডার হওয়াও সম্ভব। আত্মবিশ্বাস, অধ্যবসায় ও মেধা থাকলে পথ কখনোই রুদ্ধ হয় না।

মোস্তফা কামালের এই সাফল্য আজ মাদরাসার হাজারো শিক্ষার্থীর মনে জাগিয়ে তুলছে আশার আলো। আর প্রশ্ন থেকেই যায়—কে বলেছে, মাদরাসার ছেলেরা পারে না?

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *