মোঃ আনজার শাহ:
দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ঘোষণা করা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন ২০২৫-এর তফসিল। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ তফসিল ঘোষণা করা হয়।
আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ও কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে ভোটগ্রহণ। সেদিনই ভোট গণনা শেষে তাৎক্ষণিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
ফলাফল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের সিনেট কক্ষে কেন্দ্রীয়ভাবে প্রকাশ করবে প্রশাসন। এ নির্বাচন নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইতোমধ্যে ব্যাপক আগ্রহ ও উত্তেজনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
তফসিল অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ তারিখসমূহ
ক্রম | কার্যক্রম | তারিখ ও সময় |
---|---|---|
১ | তফসিল ঘোষণা | ২৯ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার বিকেল ৪টা |
২ | খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ | ৩০ জুলাই ২০২৫, বুধবার |
৩ | আপত্তির শেষ তারিখ | ৬ আগস্ট ২০২৫, বুধবার বিকেল ৪টা |
৪ | চূড়ান্ত ভোটার তালিকা | ১১ আগস্ট ২০২৫, সোমবার বিকেল ৪টা |
৫ | মনোনয়নপত্র বিতরণ | ১২–১৮ আগস্ট ২০২৫, প্রতিদিন সকাল ১০টা–বিকেল ৪টা |
৬ | মনোনয়নপত্র জমার শেষ সময় | ১৯ আগস্ট ২০২৫, মঙ্গলবার বেলা ৩টা |
৭ | মনোনয়নপত্র বাছাই | ২০ আগস্ট ২০২৫, বুধবার |
৮ | প্রার্থীতালিকা প্রকাশ | ২১ আগস্ট ২০২৫, বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা |
৯ | প্রার্থিতা প্রত্যাহার | ২৫ আগস্ট ২০২৫, সোমবার দুপুর ১টা |
১০ | চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ | ২৬ আগস্ট ২০২৫, মঙ্গলবার বিকাল ৪টা |
১১ | ভোটগ্রহণ | ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, মঙ্গলবার সকাল ৮টা–বিকেল ৩টা |
১২ | ভোট গণনা ও ফলাফল | ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ভোট শেষে তাৎক্ষণিকভাবে |
নতুন দিশার আশায় শিক্ষার্থীরা
ডাকসু নির্বাচন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট মহলে ব্যাপক আগ্রহ ও প্রত্যাশা দেখা যাচ্ছে। অনেকেই মনে করছেন, দীর্ঘ বিরতির পর এই নির্বাচন নতুন প্রজন্মের ছাত্ররাজনীতিকে গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরিয়ে আনতে বড় ভূমিকা রাখবে।
এক শিক্ষার্থী বলেন,
“৩৬ জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশে আশা করি ছাত্ররাজনীতির একটি ইতিবাচক ও গণতান্ত্রিক রূপ গড়ে উঠবে।”
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে অনেকেই বলেছেন, নির্বাচন যেন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হয় — সেটাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
বিশ্লেষকদের মতে, এই নির্বাচন কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্যই নয়, গোটা দেশের গণতান্ত্রিক চর্চার দিক থেকেও এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে উঠতে পারে।
পূর্ববর্তী প্রেক্ষাপট
উল্লেখ্য, সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচন হয়েছিল ২০১৯ সালে। এরপর নানা জটিলতায় আর কোনো নির্বাচন হয়নি। ফলে শিক্ষার্থীদের মাঝে গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চার সুযোগ সীমিত হয়ে পড়ে। ২০২৫ সালের এই নির্বাচন সেই শূন্যতা পূরণে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সংক্ষিপ্ত মন্তব্য
ডাকসু নির্বাচন নিয়ে নতুন করে শুরু হয়েছে আলোচনা, বিতর্ক ও প্রস্তুতি। প্রার্থীরা মনোনয়ন সংগ্রহের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন জোট গঠন ও কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে।
এখন দেখার বিষয়—এই নির্বাচন আদৌ কতটা অংশগ্রহণমূলক ও আস্থাশীল পরিবেশে সম্পন্ন হয়, এবং শিক্ষার্থীদের আশা-আকাঙ্ক্ষা কতটা প্রতিফলিত হয় নির্বাচনী প্রক্রিয়ায়।