স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:
তিস্তা বহুমুখী প্রকল্প বাস্তবায়নে চীন সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। এ বিষয়ে এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব বাংলাদেশের বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত ‘ডিক্যাব টক’-এ অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন চীনা রাষ্ট্রদূত।
তিনি বলেন, “তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে চীন পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে কোনো বাধা নেই। এখন সিদ্ধান্তটা বাংলাদেশের।”
ত্রিপক্ষীয় উন্নয়ন উদ্যোগে আগ্রহ
চীন-বাংলাদেশ-পাকিস্তান ত্রিপক্ষীয় অংশীদারিত্বের বিষয়েও বক্তব্য দেন ইয়াও ওয়েন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে আগ্রহী চীন। এর উদ্দেশ্য—উন্নত, সমৃদ্ধ প্রতিবেশী গড়ে তোলা এবং তাদের সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রাখা।”
তিনি স্পষ্ট করে বলেন, এই ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগ কোনো তৃতীয় পক্ষবিরোধী জোট নয় এবং এ নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার কোনো দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেনি। এর মূল লক্ষ্য অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও আঞ্চলিক সমৃদ্ধি অর্জন।
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতি নিয়ে উদ্বেগ
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখতে গিয়ে চীনা রাষ্ট্রদূত যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা শুল্কনীতি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নীতিমালার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এর ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে।”
নির্বাচন ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন
বাংলাদেশের রাজনীতি ও নির্বাচন প্রসঙ্গে ইয়াও ওয়েন বলেন, “আমাদের বিশ্বাস, অন্তর্বর্তী সরকার একটি গ্রহণযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে।”
রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত বলেন, “রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনই একমাত্র টেকসই সমাধান। রাখাইনের নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে এখনই প্রত্যাবাসন সম্ভব না হলেও, চীন এ বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার—উভয় পক্ষের সঙ্গেই নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে।”
চীনা যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনা
সম্প্রতি রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুলের কাছে চীনা নির্মিত একটি যুদ্ধবিমানের দুর্ঘটনার বিষয়েও প্রতিক্রিয়া জানান রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। তিনি বলেন, “এ দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে চীন আন্তরিকভাবে কাজ করছে। খুব শিগগিরই চীনের একটি কারিগরি বিশেষজ্ঞ দলের ঢাকা সফরের পরিকল্পনা রয়েছে।”