৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ‘জুলাই সনদ’ চূড়ান্ত করতে চায় ঐকমত্য কমিশন: আলী রীয়াজ

স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক: 

 

বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ‘জুলাই সনদ’-এর চূড়ান্ত রূপের কাছাকাছি পৌঁছানোর আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি এবং প্রবাসী রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

তিনি বলেন, দ্বিতীয় ধাপের সংলাপে যেসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হয়েছে, তা আজ (২৯ জুলাই) অথবা আগামীকালই সংশ্লিষ্ট দলগুলোর কাছে পাঠানো হবে। এরপর ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে চূড়ান্ত খসড়া প্রস্তুত করা সম্ভব হবে বলে কমিশনের প্রত্যাশা।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ২১তম দিনের সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সংলাপের অগ্রগতি ও পরিকল্পনা

অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “আমরা দ্বিতীয় ধাপের সংলাপ শেষ করতে চাই ৩১ জুলাইয়ের মধ্যেই। ইতোমধ্যে যেসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে প্রাথমিক ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলোর তালিকা তৈরি করে আজ বা আগামীকাল তাদের কাছে পাঠানো হবে। এরপর পরশু দিনের (৩১ জুলাই) মধ্যে চূড়ান্ত খসড়ার পর্যায়ে পৌঁছাতে পারব বলে আমরা আশাবাদী।”

তিনি জানান, আজকের আলোচ্য সূচিতে রয়েছে—তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা, সংসদে নারীদের প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি, মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (CAG) এবং ন্যায়পাল (Ombudsman) নিয়োগ সংক্রান্ত বিধান।

নতুন প্রস্তাব ও সমন্বয়

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে কয়েকটি রাজনৈতিক দল নতুন করে কিছু প্রস্তাব উত্থাপন করেছে বলেও জানান আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, “সেসব প্রস্তাব আমরা সমন্বিতভাবে পর্যালোচনা করে একটি সংবেদী ও ব্যালান্সড খসড়া তৈরির চেষ্টা করছি। প্রতিটি দলের নিজস্ব অবস্থানকে গুরুত্ব দিয়েই আমরা এগোচ্ছি।”

চূড়ান্ত রূপে ঐকমত্যের অংশ অন্তর্ভুক্তির প্রতিশ্রুতি

তিনি আরও বলেন, “৩১ জুলাইয়ের মধ্যে যেভাবেই হোক, ঘোষণাপত্রের সেই অংশগুলো অন্ততপক্ষে চূড়ান্ত করতে হবে, যেগুলোতে স্পষ্ট ঐকমত্য পাওয়া গেছে। এগুলোই পরবর্তীতে ‘জুলাই সনদ’-এর মূল ভিত্তি হয়ে উঠবে।”

উপস্থিত বিশিষ্টজনেরা

মঙ্গলবারের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, রাজনৈতিক গবেষক সফর রাজ হোসেন এবং অধ্যাপক ড. আইয়ুব মিয়া।

পটভূমি

উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় ‘জুলাই সনদ’ প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়। এই ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে চলমান অন্তর্বর্তী সরকার পরবর্তী রাজনৈতিক রূপরেখা নির্ধারণ করতে চায়, যাতে ছাত্র আন্দোলনের ন্যায়সঙ্গত দাবি এবং গণতান্ত্রিক কাঠামোর সংস্কারপ্রয়াস স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *