দৌলতপুরে নির্মাণাধীন ব্রিজের বিদ্যুৎ লাইনে স্পৃষ্ট হয়ে শ্রমিক আহত, আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় প্রেরণ

মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, মানিকগঞ্জ:

মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার কলিয়া ইউনিয়নের গাজিসাইল গ্রামে নির্মাণাধীন একটি ব্রিজে কাজ করার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ফিরোজ (৩০) নামে এক যুবক গুরুতর আহত হয়েছেন। আহত ফিরোজ বরিশালের পিরোজপুর জেলার বাসিন্দা এবং সংশ্লিষ্ট ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্পে শ্রমিক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুর আনুমানিক ২টার দিকে গাজিসাইল ব্রিজের পাশে একটি বিদ্যুতের লাইনের পাশে ডিস সংযোগের কাজ করার সময় অসাবধানতাবশত উচ্চমাত্রার (প্রায় ১১,০০০ ভোল্ট) লাইনের সংস্পর্শে আসেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হন।

দুর্ঘটনার পরপরই প্রচণ্ড শব্দে চারপাশ কেঁপে ওঠে। স্থানীয়রা তাৎক্ষণিকভাবে বাড়ির মেইন সুইচ বন্ধ করে বাঁশের লাঠি দিয়ে ফিরোজকে বিদ্যুতের তার থেকে আলাদা করেন। এতে তার মাথার চামড়া পুড়ে যায় এবং বুকে, হাতে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর দাহ্য ক্ষতের সৃষ্টি হয়। তার শরীরের পোশাকও আগুনে পুড়ে যায়।

আহত ফিরোজকে প্রথমে স্থানীয়ভাবে ভ্যানযোগে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, বৃষ্টিভেজা পরিবেশে কোনো ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড কিংবা প্রকৌশল কর্মকর্তার উপস্থিতি ছাড়াই নির্মাণকাজ চলছিল। তারা এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

এছাড়া, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পথচারী জানান, দুর্ঘটনার পর তারা মোবাইলে ছবি ধারণ করতে গেলে নির্মাণকাজে নিয়োজিত কয়েকজন শ্রমিক জোরপূর্বক তাদের মোবাইল থেকে ছবি মুছে দেন।

প্রায় ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য এই ব্রিজের নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের ৫ ডিসেম্বর এবং নির্ধারিত মেয়াদ অনুযায়ী শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ২০২৫ সালের ৪ ডিসেম্বর। ব্রিজটির নির্মাণকাজ পরিচালনা করছে মেসার্স জাহিদ অ্যান্ড ব্রাদার্স। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী মোঃ ইমতিয়াজ আজিফ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

দৌলতপুর উপজেলা প্রকৌশলী এমাম জানান, “ঘটনাটি আগে আমার জানা ছিল না। এখন বিষয়টি বিস্তারিতভাবে খোঁজ নিচ্ছি।”
এদিকে, জেলা প্রকৌশলী এবিএম খোরশেদ আলম বলেন, “আমি উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ থেকে বিস্তারিত তথ্য নেওয়ার চেষ্টা করছি।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *