গণঅভ্যুত্থান পরে আইনের সুরক্ষা পাচ্ছে কারা, যাত্রাবাড়ী থানার চুরি মামলায় পুলিশের রহস্যময় প্রতিবেদন

মোঃ বাদল:

দেশের জনগণ গণতন্ত্র, বাক-স্বাধীনতা ও সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার হরণকারী দলের ক্ষমতা থেকে পতনের লক্ষ্যে ২৪-এর জুলাই-আগস্টে সংগঠিত হয় ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান। যার ফলে দেশ ছাড়েন সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সাথে অন্ধকারে চলে যায় ক্ষমতার অপব্যবহারকারী আওয়ামী লীগের অনেক এমপি, মন্ত্রী ও নেতাকর্মী এবং তাদের সহযোগী অনেক পুলিশ সদস্য কারাবন্দী জীবন যাপন করছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার পুলিশ বাহিনীকে নিজ স্বার্থ আদায়ের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। যার ফলে ঘটে দেশের বিভিন্ন থানায় হামলা ও নৃশংস পুলিশ হত্যাকাণ্ড। এরপর নতুন সোনার বাংলা নির্মাণে অন্তর্বর্তী সরকারের মাধ্যমে পুলিশের গুরু দায়িত্ব হয় নাগরিক সুরক্ষার ও আইনের সুশাসন নিশ্চিত করা। যার লক্ষ্য পূরণসহ সংস্থাটির সুনাম অর্জনে অক্লান্তভাবে কাজ করে যাচ্ছে সরকার ও এই সংস্থাটি। কিন্তু বাহিনীটির সুনাম ও লক্ষ্য পূরণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে পুলিশেরই কিছু কতিপয় সদস্যের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকার কারণে। সাম্প্রতিক এমন একটি ঘটনার তথ্য পাওয়া গেছে।

সূত্রে জানা যায়, যাত্রাবাড়ী থানায় মোটরসাইকেল চুরির মামলা করা হয়। যার মামলা নম্বর ৩৯, তারিখ ১৩/০২/২০২৫। বাদী মঞ্জুর হোসেন ওরফে সেন্টু এজাহারে উল্লেখ করেন, ২২ নম্বর উত্তর সায়দাবাদ মারুফ ট্রেড সেন্টারের ঠিকানায় দারোয়ানের কাছ থেকে মাসিক (১০০০) টাকা ভাড়ায় গত জানুয়ারি মাস হতে তার মোটরসাইকেল রাখেন। গত ইং ২৭/০১/২০২৫ তারিখ রাত ১২:৩০ মিনিটে মোটরসাইকেল পার্কিংয়ে রেখে যান এবং পরে ৩১/০১/২০২৫ তারিখ দুপুরে পার্কিং প্লেসে গিয়ে দেখেন সেখানে তার মোটরসাইকেল নেই। পরে মোটরসাইকেলের খোঁজে দারোয়ানকে জিজ্ঞেস করলে সে কিছু জানে না বললে মঞ্জুর হোসেন ওরফে সেন্টু মার্কেটের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে অনৈতিক সুবিধা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ১৫ দিন পর, ১২/০২/২০২৫ তারিখে যাত্রাবাড়ী থানায় গেলে এসআই নূর হোসেন (বিপি নম্বর ৯১১১১ ৩৬০০৭)-এর সহায়তায় ঘটনাস্থল ‘মার্কেট সায়দাবাদ ট্রেড সেন্টার’ নামের পরিবর্তে ‘মারুফ ট্রেড সেন্টার’ ব্যবহার করে মার্কেটের একাংশের মালিক সৌরভ ও টাইলস ব্যবসায়ী সোহেলের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।

উল্লেখ্য, মামলা দায়ের করার আগেই এসআই নূর হোসেন বিবাদীর অপর বাড়ির গ্যারেজে—যা উক্ত মার্কেটের পাশেই অবস্থিত—সেখান থেকে মোটরসাইকেলটি পুলিশের জিম্মায় নেন। মোটরসাইকেলটি এসআই তার নিজ হেফাজতে নেওয়ার পর মামলা রুজু করা হয়। যার তথ্য আদালতের কাছে গোপন করেন এসআই নূর হোসেন। পরে ঐ বাড়ি এবং পাশের মার্কেটের মালিক সৌরভকে মিথ্যা মামলায় আসামি করে ফাঁসানো হলে সৌরভের বড় ভাই, ঢাকা সাউথ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বশির আহম্মেদ (সানি) বিষয়টি উল্লেখ করে সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বরাবর দরখাস্ত করেন। এতে এসআই নূর হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে রাজধানীর টিভির প্রতিবেদক বশির আহম্মেদ (সানি)-কে হুকুমের আসামি করে মামলার চার্জশিটে উল্লেখ করেন।

বিস্তারিত আসছে, চোখ রাখুন আগামী পর্বে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *