স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:
বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক চিত্র কেমন হবে—তা নির্ধারণে আগামী পাঁচ-ছয়দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময় হিসেবে বিবেচিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনানুষ্ঠানিক আলাপচারিতায় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আগামী পাঁচ-ছয়দিনের মধ্যে আমরা অনেক কিছু পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারব—আমরা কোন দিকে যাচ্ছি, কেমন হবে রাজনৈতিক বন্দোবস্ত।”
তিনি আরও বলেন, “যা–ই হোক না কেন, নির্বাচন পেছাবে না। প্রধানমন্ত্রী উপদেষ্টা এই বিষয়ে অত্যন্ত দৃঢ় অবস্থানে রয়েছেন। দেশের মানুষ নির্বাচনে অংশ নেবে, সেটি আমরা বিশ্বাস করি। আর জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকলে কোনোভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন ঠেকানো যাবে না।”
নির্বাচন নিয়ে আশাবাদ
শফিকুল আলম জানান, বর্তমান সরকার শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচন আয়োজন করতে বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন, “আমরা আশা করছি একটি শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার পারস্পরিক সমঝোতা, সংলাপ এবং আস্থা ফিরিয়ে আনাই এখন সবচেয়ে জরুরি বিষয়।”
চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান
চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান প্রসঙ্গে প্রেস সচিব স্পষ্ট করে বলেন, “এই বিষয়ে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে। কেউ যদি চাঁদাবাজিতে জড়িত থাকে, সে যত শক্তিশালীই হোক না কেন, তাকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে। প্রমাণ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
দলীয় অর্থায়নে স্বচ্ছতা না থাকা দুঃখজনক
রাজনৈতিক দলগুলোর অর্থের উৎস ও ফান্ড রেইজিং সম্পর্কে তিনি বলেন, “স্বাধীনতার ৫৪ বছর পেরিয়ে গেলেও আমাদের দেশে রাজনৈতিক দলগুলোর অর্থায়নের প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয়নি, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।” তিনি এ বিষয়ে দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার প্রয়োজন বলেও মত দেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যকারিতা
শফিকুল আলম আরও বলেন, “এই সরকার একটি ক্ষতিগ্রস্ত, অগোছালো রাজনৈতিক বাস্তবতা থেকে দায়িত্ব নিয়েছে। সেই প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্যকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। তারা দেশের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য নিরবিচারে কাজ করে যাচ্ছে।”
প্রসঙ্গত, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা ধরনের সমঝোতার আলোচনা চলছে। এর মধ্যে প্রেস সচিবের এই বক্তব্যকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা হিসেবেই দেখছেন বিশ্লেষকরা। এখন দেখার বিষয়, এই ‘গুরুত্বপূর্ণ পাঁচ-ছয়দিনে’ বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়।