খালেদা জিয়ার কণ্ঠ নকল করে প্রতারণা, ১৩ ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ

স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক: 

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কণ্ঠ নকল করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আদায়ের অভিযোগে মোতাল্লেস হোসেন ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ১৩টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সংশ্লিষ্ট আদালতের আদেশে এসব হিসাব থেকে অস্থায়ীভাবে জব্দ করা হয়েছে ৫ কোটি ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৭৮২ টাকা।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি এসব তথ্য জানায়।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, খালেদা জিয়ার লিয়াজোঁ অফিসার পরিচয়ে এবং তার কণ্ঠ অনুকরণ করে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে প্রতারণামূলকভাবে যোগাযোগ করতেন মোতাল্লেস হোসেন। এই প্রক্রিয়ায় তিনি বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

সিআইডির তদন্তকালে বিভিন্ন ব্যাংক রিপোর্ট, দলিল এবং আর্থিক নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, মোতাল্লেস হোসেন এবং তার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে মোট প্রায় ২৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই অর্থ অবৈধ উৎস থেকে আসতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে সংস্থাটি।

সিআইডি আরও জানিয়েছে, মোতাল্লেস হোসেনের আর্থিক কর্মকাণ্ড, স্থাবর সম্পত্তি এবং বিদেশে অর্থ পাচার সংক্রান্ত সম্ভাব্য সংযোগ খতিয়ে দেখছে তদন্ত দল। ইতোমধ্যে তার সম্পদের উৎস এবং ব্যবহার যাচাই-বাছাই শুরু হয়েছে।

এছাড়া, প্রতারণার শিকার ব্যক্তিদের জবানবন্দি গ্রহণ এবং জড়িত সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্রের অন্য সদস্যদের শনাক্ত করার কাজও জোরেশোরে চালিয়ে যাচ্ছে সিআইডি। প্রয়োজন হলে ইন্টারপোলসহ আন্তর্জাতিক সংস্থার সহায়তায় তদন্ত সম্প্রসারণের কথাও বিবেচনায় রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, মোতাল্লেস হোসেন দীর্ঘদিন ধরে ‘উচ্চপর্যায়ের পরিচিতি’ ও ‘রাজনৈতিক প্রভাব’ দেখিয়ে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষকে বিশ্বাসে এনে প্রতারণা করতেন। বেগম খালেদা জিয়ার নাম ও কণ্ঠ ব্যবহার করে তিনি নিজেকে তার ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে উপস্থাপন করতেন।

সিআইডির কর্মকর্তারা বলছেন, “এটি নিছক একটি প্রতারণা নয়, বরং রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতার মতো অপরাধ। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নাম ও পরিচিতিকে ব্যবহার করে এই ধরনের কার্যকলাপ গুরুতর নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। এজন্য মামলাটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।”

উল্লেখ্য, মোতাল্লেস হোসেন বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে রয়েছেন। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তার সকল ব্যাংক লেনদেন, সম্পদ হস্তান্তর ও বিদেশ গমনে বিধিনিষেধ আরোপের সুপারিশও করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *