স্বাধীন আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
‘জয় বাংলা’ স্লোগান শুনে রীতিমতো ক্ষিপ্ত হয়ে পড়লেন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। হুগলির আরামবাগ এলাকায় গাড়িবহর থামিয়ে গাড়ি থেকে নেমে তিনি তৃণমূল কর্মীর দিকে তেড়ে যান এবং পাল্টা ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেন। এ সময় দু’জনের মধ্যে উত্তপ্ত বাদানুবাদ হয়, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়।
ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে। হুগলি জেলার পুরশুরা বিধানসভার রাধানগরে ‘কন্যা সুরক্ষার যাত্রা’ কর্মসূচিতে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। পথিমধ্যে আরামবাগের হেলান এলাকায় তার গাড়িবহর পৌঁছালে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী শেখ মঈদুল ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন।
এই স্লোগান শুনেই মেজাজ হারান শুভেন্দু। গাড়ি থামিয়ে কালো গাড়ি থেকে নেমে তিনি পাল্টা ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেন এবং মঈদুলের দিকে তেড়ে গিয়ে বলেন, “কে কে? জয় শ্রীরাম!” তখন মঈদুল পাল্টা বলেন, “জয় শ্রীরাম না, জয় বাংলা।”
এরপর উত্তেজনার পারদ চড়তে থাকে। শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “হিন্দুর বাচ্চা!” এবং শেখ মঈদুলকে আক্রমণ করে বলেন, “তুই পাকিস্তানি, রোহিঙ্গা।” পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় মঈদুলও বলেন, “আপনিই রোহিঙ্গা!” উত্তেজিত শুভেন্দু অধিকারী তখন বলেন, “আমি মমতাকে হারিয়েছি, চামড়া তুলে নেব!”
এরপর কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশ দেন তৃণমূল কর্মীটিকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য। বাহিনী মঈদুলকে ওই স্থান থেকে জোরপূর্বক সরিয়ে দেয়।
ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর রাজ্য রাজনীতিতে শুরু হয়েছে বিতর্ক। তৃণমূল কংগ্রেস একে ‘ভীত শুভেন্দুর প্রতিক্রিয়া’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেছে, “জয় বাংলা শুনলেই যেন তার গায়ে ফোসকা পড়ে।”
অন্যদিকে, বিজেপির পক্ষ থেকেও পাল্টা প্রতিক্রিয়া এসেছে। দলটির নেতারা বলছেন, “বাংলাদেশ থেকে ধার করে আনা স্লোগান ‘জয় বাংলা’ পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতির নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেও ‘খেলা হবে’ স্লোগান ধার করেছিলেন, কিন্তু বাংলার মানুষ এবার আর এসব ধার করা স্লোগান গ্রহণ করবে না।”
এই ঘটনার মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গে চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনা ও বিভাজন আবারও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, বিশেষত ভাষা ও পরিচয় রাজনীতিকে ঘিরে।