মুশাহিদ আহমদ সুনামগঞ্জ :
সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলায় একটি নিরীহ পরিবারকে একই গ্রামের একাধিক পরিবার মিলে হয়রানী করায় পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সম্প্রতি উক্ত নিরীহ পরিবারের পক্ষে গ্রামের অধিকাংশ পরিবারের লোকজন তাদের পক্ষে অবস্থান নিলে প্রতিপক্ষ একাধিক পরিবারের লোকজনও তাদেরকে হয়রাণী করতে স্থানীয় থানায় একাধিক মিথ্যা অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষ লোকজনের বিরুদ্ধে। নিরীহ ভূক্তভোগী পরিবারের পক্ষে সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার বরাবরে (গত ২৭ জুলাই/২৫) গাগলী গ্রামের লোকজন একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলার গাগলী গ্রামে বিগত ২৫ বছর ধরে আসাদুজ্জামান স্বপন নামে এক ব্যক্তি গাগলী এলাকায় বসত বাড়ীর জায়গা ক্রয় করে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস শুরু করেন। গত ২/৩ মাস ধরে আসাদুজ্জামান স্বপনের প্রতিপক্ষ একই গ্রামের মৃত আব্দুর রইছের পুত্র মোঃ ইলিয়াছ আলী, মৃত ছোয়াব আলীর ছেলে আব্দুল বাছিত বাচ্চু, মৃত আজির উদ্দিনের ছেলে জাকারিয়া তালুকদার, আপ্তাব মিয়ার ছেলে জাবেদীন, আব্দুল্লাহ মিয়ার ছেলে ফারদিন রিয়াদ, মৃত ছোয়াব আলীর ছেলে আব্দুল্লাহ মিয়া, মৃত আব্দুর রউছ এর ছেলে মনু মিয়া, আফজল মিয়ার ছেলে লোকমান মিয়া, মৃত ময়না মিয়ার ছেলে আবুল হাসনাত, মৃত মখলিছ মিয়ার ছেলে আলকাছ মিয়া, মৃত আব্দুর রইছ এর ছেলে মিরাজ মিয়া, বশর মিয়ার ছেলে হোসেন মিয়া ও শায়েক মিয়া, মৃত ইদ্রিছ মিয়ার ছেলে আফজল মিয়াগণ তার ক্ষতি সাধনে উঠেপড়ে লাগে। গত বছরের ৫ আগষ্টের পরবর্তী সময়ে গাগলী গ্রামের আসাদুজ্জামান স্বপনের প্রতিপক্ষ গ্রামে অসামাজিক কার্যকলাপ, চাঁদাবাজি, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, জমি দখল, মাদক সহ বিভিন্ন ধরণের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে এবং প্রকাশ্যে দিবালোকে অস্ত্রের মহড়া দেয় বলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে। সম্প্রতি অভিযুক্ত ব্যক্তিরা আসাদুজ্জামান স্বপনের বসত বাড়ী জবর দখলের পায়তরায় লিপ্ত থেকে তাকে ও তার পরিবারকে গ্রাম থেকে বিতাড়িত করতে তাকে ও তার পরিবারের লোকজনদেরকে অত্যাচার, নির্যাতন ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালিয়ে তাদেরকে আতংকগ্রস্ত করে।
অভিযোগে অভিযুক্ত ইলিয়াছ আলীর কাছে অগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমেও তা ভাইরালও হয়েছে। শান্তিগঞ্জ থানায় আসাদুজ্জামান স্বপন বাদী হয়ে একাধিক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেও কোন অদৃশ্য কারণে তিনি প্রতিকার পাচ্ছেন না। বরং তার বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষের লোকজন একাধিক মিথ্যা ও হয়রাণী মূলক অভিযোগ দায়ের করে যাচ্ছে। বর্তমানে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা আসাদুজ্জামান স্বপন সহ তার লোকজনদেরকে মারপিট, ভয়ভীতি সহ প্রাণে হত্যা ও গুমের হুমকি প্রদান করায় তারা বাড়ী ঘর ছেড়ে আশপাশে আত্মীয় স্বজনদের বাড়ীতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
গাগলী গ্রামের প্রবীণ শালিশি ব্যাক্তিত্ব আব্দুল গফফার বলেন, আসাদুজ্জামান স্বপন আমাদের গ্রামের জামাই। তার সাথে তার চাচা শ্বশুরের গোষ্ঠীর বিবাদ অনেক আগের। আমরা চেষ্টা করেছি শালিশের মাধ্যমে শেষ করার। কিন্তু কোন পক্ষই সমাধানে আগ্রহী হয় নাই। তাই দুইপক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আইন শৃংখলা বাহীনির বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে যাচ্ছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য হরফুজ্জামান, বদরুজ্জামান, জফর আলী, ফখরুজ্জামান, গিয়াস উদ্দিন,নুর মিয়া সহ অনেকেই বলেন, গাগলী গ্রামের ইলিয়াছ মিয়া সহ একটি চক্র দীর্ঘদিন যাবৎ গ্রামের মধ্যে বিশৃংখলা সৃষ্টি করে আসছে। তারা নিরীহ মানুষদের জায়গা জমি জবর দখল, মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রামের লোকজনদেরকে হয়রাণী করে আসছে। আমরা নিরীহ গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে বিচার চাই।
নিরীহ পরিবারের সদস্য আসাদুজ্জামান স্বপন বলেন, আমার মূল বাড়ি ময়মনসিংহ। ১৫ বছর আগে শ্বশুর বাড়ির লোকজনের কাছ থেকে জায়গা কিনে গাগলী গ্রামে বসবাস শুরু করি। এখন তাদের সাথে মনোমালিন্য হওয়ায় তাদের কাছ থেকে ক্রয় করা জায়গা তাদের দিয়ে চলে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে। একদিন আমাকে মারধরও করা হয়েছে। আমি প্রাণভয়ে ঘরছাড়া।
সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার তোফায়েল আহম্মেদ বলেন, শান্তিগঞ্জ থানা এলাকার গাগলী গ্রামবাসীর পক্ষে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি সুষ্টু তদন্ত পূর্বক যাচাই বাচাই করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।