জাতিসংঘকে ‘লাল কার্ড’ দেখালো নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

মাহমুদা আক্তার নাঈমা: 

জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় বাংলাদেশে স্থাপনের উদ্যোগের বিরুদ্ধে ‘লাল কার্ড কর্মসূচি’ পালন করেছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা এই উদ্যোগকে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেন।

শুক্রবার (১ আগস্ট ২০২৫) জুমার নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন “চির উন্নত মম শির” প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীরা এই কর্মসূচির আয়োজন করেন। এতে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী।

কর্মসূচির অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা হাতে লাল কার্ড তুলে ধরে স্লোগান দেন:
“দালালি না মুক্তি”,
“দিল্লি না ঢাকা”,
“ওয়াশিংটন না ঢাকা”,
“জাতিসংঘের ভেক ধ’রে, আগ্রাসন থামাও রে”।

শিক্ষার্থীদের মতে, জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপ বাড়বে। এতে বাংলাদেশের সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ, রাজনৈতিক স্বকীয়তা এবং জাতীয় নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তারা বলেন, “ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধে জাতিসংঘের ব্যর্থতা তাদের দ্বিচারিতার স্পষ্ট প্রমাণ। এমন একটি সংস্থা আমাদের দেশে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার নামে নতুন সংকট তৈরি করতে পারে।”

বক্তারা আরও দাবি করেন, “মৃত্যুদণ্ড বাতিল, সমকামিতার স্বীকৃতি কিংবা ধর্মীয় অনুভূতি নিয়ে প্রশ্ন তোলা—এসবই জাতিসংঘের এজেন্ডার অংশ। বাংলাদেশের জনগণের মূল্যবোধ ও আইনকাঠামোর সঙ্গে এসব সাংঘর্ষিক। তাই জাতিসংঘের এই পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করছি।”

শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি থেকে একযোগে বলেন, “বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনো বিদেশি সংস্থার হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া হবে না। জাতিসংঘ চাইলেই এখানে কার্যালয় খুলতে পারে না। এটি প্রতিষ্ঠা মানে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ওপর সরাসরি আঘাত।”

তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান— দ্রুত ও সুনির্দিষ্টভাবে জাতিসংঘের এমন তৎপরতা রুখে দিতে এবং ভবিষ্যতে এমন কোনো বিদেশি ‘মানবাধিকার দপ্তর’ স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ না করতে।

প্রতিবাদ কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়। তবে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে এই উদ্যোগ বাতিল না হলে তারা আরও বড় পরিসরে আন্দোলনের ডাক দেবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *