বাসে চড়ে নেটিজেনদের মন জিতে নিচ্ছেন তারেক রহমান

স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক: 

২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর চিকিৎসার উদ্দেশ্যে একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এরপর থেকে প্রায় ১৭ বছর ধরে তিনি লন্ডনে অবস্থান করছেন। দীর্ঘ প্রবাস জীবনে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলের এই শীর্ষ নেতা যেভাবে সাধারণ জীবনযাপন করে যাচ্ছেন, তা এখন নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

সম্প্রতি তারেক রহমানের পাবলিক বাসে ওঠার কয়েকটি স্থিরচিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা গেছে, লন্ডনের এক বাসস্ট্যান্ডে ছাউনির নিচে অপেক্ষা করছেন তিনি, হাতে মোবাইল ফোন। বাস আসার পর তিনি সাধারণ যাত্রীদের মতো তাতে উঠে যান। পুরো প্রক্রিয়ায় তার আশপাশে কোনো দেহরক্ষী বা সহচর ছিল না—যা রাজনৈতিক নেতাদের চেনা দৃশ্যের সঙ্গে একেবারেই ভিন্ন।

শুক্রবার (১ আগস্ট) গভীর রাতে বিএনপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে এই ছবিগুলো প্রকাশ করা হয়। ক্যাপশনে লেখা হয়:
“সাধারণ জীবনযাপনে অভ্যস্ত তারেক রহমান। যুক্তরাজ্যে বসবাসকালীন কোনো ভিআইপি সুবিধা গ্রহণ না করে পাবলিক ট্রান্সপোর্টে চলাচল করেন সাধারণ মানুষের মতোই।”

এই দৃশ্য সামাজিক মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যাপক প্রশংসা কুড়ায়। অনেকেই মন্তব্য করেছেন, “নেতা এমনই হওয়া উচিত, যিনি নিজের জীবনাচরণ দিয়েই জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করেন।”

বিশ্লেষকদের মতে, একদিকে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তার দেশে ফেরা নিয়ে নানা গুঞ্জন চলছে, অন্যদিকে তার এই সাদামাটা জীবনযাপন একটি শক্তিশালী বার্তা দিচ্ছে। যদিও এখনও পর্যন্ত তার দেশে ফেরার বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি, তবে তার এই সাধারণ জীবনযাপন নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা জাগাচ্ছে বলেও মন্তব্য করছেন অনেকে।

রাজনীতির মাঠে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন কিনা—এমন প্রশ্নের জবাব সরাসরি না মিললেও তার প্রতিটি কর্মকাণ্ড এখন গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাধারণ মানুষ। লন্ডনে ভিআইপি প্রটোকল বা গাড়িবহরের আড়ালে না থেকে সাধারণ মানুষের কাতারে অবস্থান করায় অনেকেই বলছেন—”তারেক রহমান বদলে গেছেন, কিংবা নতুন এক তারেককে দেখছে বাংলাদেশ।”

এদিকে, বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, যুক্তরাজ্যে তারেক রহমানের চলাফেরা ও জীবনযাপন বরাবরই ছিল সংযত এবং নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে। তবে সম্প্রতি তার কর্মকাণ্ডে যেন সক্রিয় রাজনৈতিক বার্তার আভাস মিলছে।

রাজনীতিতে ফেরার প্রতিটি মুহূর্তে প্রতীকী বার্তার গুরুত্ব অপরিসীম—এমন মন্তব্য করে এক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, “পাবলিক বাসে চড়া শুধু এক নিছক ছবি নয়, এটা হতে পারে আগামী রাজনীতির এক সিম্বলিক সূচনা।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *