স্টাফ রিপোর্টার:
সারাদেশের অভিযুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের পুনরায় যাচাই-বাছাইয়ের লক্ষ্যে জামুকায় সাক্ষাৎকার শুরু হয় গত ১ জুন কুমিল্লা থেকে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৯ জুলাই জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে (জামুকা)—রংপুর বিভাগের গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার ১৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে কথিত রক্ষীবাহিনীর সদস্য ও পরবর্তীতে সেনাবাহিনীতে যোগদানকৃত মোঃ দেলোয়ার হোসেন কর্তৃক জামুকায় দেওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে সেইসব মুক্তিযোদ্ধাদের নানা প্রশ্নবাণে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা কিনা তা যাচাই করা হয়।
এর পূর্বে সকলকে নির্ধারিত একটি ফর্মে মুক্তিযুদ্ধের উপর কয়েকটি প্রশ্নের লিখিত জবাব দিতে হয়। তার উপর ভিত্তি করেই নানা প্রশ্ন করা হয়। এর মধ্যে যারা বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রদত্ত গেজেট, সনদ, এমআইএস, পরিচয়পত্র পেয়েছেন—তারা সকল কাগজপত্র প্রদর্শন করলেও উপস্থিত জামুকা সদস্যরা সেটাকে তেমন একটা গুরুত্ব দেননি। বিশেষ করে ন্যাপ, কমিউনিস্ট পার্টি, ছাত্র ইউনিয়ন বিশেষ গেরিলা বাহিনীর কোন কাগজপত্রকেই তাঁরা সুনজরে নেননি।
এছাড়া, উক্ত অভিযোগকারী দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধেও ইতিপূর্বে সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট উপজেলার কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধা অভিযোগ দায়ের এবং সাদুল্লাপুর উপজেলা প্রেসক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলন করেন। কিন্তু দেলোয়ার গং স্বৈরাচারের দোসর হওয়ায় সে সময় এই ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যায়।
অথচ অভিযোগকারী মোঃ দেলোয়ার হোসেন গত ফ্যাসিস্ট সরকারের অন্যতম দোসর হিসেবে কাজ করেছেন এবং তার বড় ছেলে আহসান হাবিব স্বাধীন গাইবান্ধা জেলা তাঁতী লীগের সভাপতি ছিল। কিন্তু ফ্যাসিস্ট সরকারের লোকেরা এখনো কিভাবে জামুকা/সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে জায়গা পাচ্ছে তা কারো বোধগম্য নয়।
অনেক ভুক্তভোগী দেলোয়ারের মিথ্যা অভিযোগের ব্যাপারে প্রশ্ন তুললেও সেটা আমলে নেওয়া হয়নি। এমনকি অনেক মুক্তিযোদ্ধার বয়স নির্বাচন কমিশন কর্তৃক সংশোধিত হলেও তা জামুকার সদস্যবৃন্দ মানতে নারাজ। এভাবে অনেক মুক্তিযোদ্ধারাই জামুকায় সুবিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। জানা যায়, অভিযোগকারী দেলোয়ার হোসেন সেনাবাহিনীর সাবেক সুবেদার মেজর হওয়ায় এবং জামুকার তিন সদস্যও সাবেক সেনা কর্মকর্তা হওয়ায় দেলোয়ার হোসেন তাদের সহানুভূতি লাভে সক্ষম হয়, যা বিচারহীনতার নামান্তর।
অভিজ্ঞ মহলের মতে, দলীয় মতভেদ ও ব্যক্তি স্বার্থ/দ্বন্দ্বের কারণে একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে এই ধরনের ভুয়া ও মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করছে।