বিজয়নগরে ইসির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সর্বদলীয় বিক্ষোভ-মিছিল ও মহাসড়ক অবরোধ

মোহাম্মদ সাদেকুল ইসলাম: 

নির্বাচন কমিশন (ইসি) কর্তৃক ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের খসড়া প্রকাশের পর বিজয়নগর উপজেলাজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। খসড়া অনুযায়ী উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন—বুধন্তি, চান্দুরা ও হরষপুর—বিজয়নগর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়। এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে

রবিবার (৩ আগস্ট) সকাল ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত উপজেলার চান্দুরা এলাকায় সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটির উদ্যোগে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক এক ঘণ্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় মহাসড়কের উভয় দিকে যানজটের সৃষ্টি হয়। এসসি পরীক্ষার্থীদের দুর্ভোগ লাঘবে অবরোধ তুলে নেয় আন্দোলনকারীরা।

উক্ত আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক এডভোকেট ইমাম হোসেন। এ সময় বক্তব্য রাখেন সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. রফিকুল ইসলাম, হেফাজতে ইসলামের আফজাল হোসেন, সিহাব হোসেন, বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বি আরডিবি’র ভাইস-চেয়ারম্যান সাইদ খন্দকার, সাবেক উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান লিটন মুন্সী, যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক গোলাম জহির,

স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান মনির, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আলী হোসেন, জামায়াত ইসলামের ইউনিয়ন সেক্রেটারি শিহাব হোসেন, এনামুল ইসলাম, শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল কাদের মিয়াসহ নানা রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।

বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও এলাকাবাসী “বিজয়নগর নিয়ে ষড়যন্ত্র রুখে দাও”, “বিজয়নগরের বিভক্তি মানি না”, “আমাদের দাবি মানতে হবে”—এমন স্লোগানে রাস্তা মুখরিত করে তোলেন। এক ঘণ্টাব্যাপী শান্তিপূর্ণভাবে মহাসড়কে বসে বিক্ষোভ প্রদর্শনের মাধ্যমে তারা সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান।

বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও বিজয়নগরকে পূর্ণ মর্যাদায় নির্বাচনী আসন হিসেবে স্থায়ী করা হয়নি। কখনো সদর, কখনো সরাইল, আবার কখনো নাসিরনগর—এভাবে বিভিন্ন আসনে ভাগ-বিভক্ত করে উপজেলাবাসীকে অবহেলিত রাখা হয়েছে। এই বিভক্তির কারণে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি উপজেলায়; এটি নিছক রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের ফল বলেও মন্তব্য করেন তারা।

বক্তারা আরও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “বিজয়নগর উপজেলার সঙ্গে ছিনিমিনি খেলা বন্ধ না হলে আরও কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।”

এ বিষয়ে বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

উল্লেখ্য, উক্ত খসড়া তালিকার বিরুদ্ধে আপিল আগামী ১০ আগস্ট পর্যন্ত জমা দেওয়া যাবে।

শুনানি শেষে নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *