স্টাফ রিপোর্টার:
১০ বছর যাবত শ্যামপুর রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখকদের সভাপতি হিসেবে রয়েছেন মফিজ উদ্দিন মুন্সী। এই পদে থেকে ভাগ্য খুলে যায় তার। এখন তিনি নিজেকে বিএনপির লোক বলেও দাবি করেন এবং ফের আবারও সভাপতি হয়েছেন বলে জানান। প্রশ্ন উঠেছে—তার খুঁটির জোর কোথায়?
তিনি এমনভাবে রেজিস্ট্রি অফিস জিম্মি করে রেখেছেন যে, তার কথা ছাড়া কোনো দলিল হয় না। একই পরিবারের ৯ জন সদস্য শ্যামপুর রেজিস্ট্রি অফিসে চাকরি করছেন। অফিসের স্টাফদেরও জিম্মি করে রেখেছেন তিনি। তার শালীদের রয়েছে ফ্ল্যাট, গাড়ি ও ব্যবসা। সাধারণ মানুষ এ সব দেখে চুপ থাকেন, কারণ মফিজের “অনেক ক্ষমতা”।
তিনি দলিলের শ্রেণি পরিবর্তন করে অন্যের জমি নিজের আত্মীয়-স্বজনের নামে রেজিস্ট্রি করে দেন, যা নিয়ে একাধিকবার সমস্যা হয়েছে। কেউ যদি প্রতিবাদ করতে যান, তাহলে মফিজের লোকজন মারধরের মাধ্যমে ভয়ভীতি দেখান। এমনকি অভিযোগ আছে, কেউ যদি তার বিরুদ্ধে কথা বলেন, তাকে ওই অফিসে ঢুকতেও দেওয়া হয় না।
শ্যামপুর অফিসের এক ওমেদার বলেন, “ভাই, আমরা জিম্মি হয়ে গেছি। কিছু বললে মফিজ আমাদেরকে অফিসে আসতে দেয় না, কারণ তার অনেক ক্ষমতা।” ৫ তারিখের পর আবারও সভাপতি হয়ে মফিজ গড়ে তুলেছেন এক বিশাল সিন্ডিকেট। কোনো দলিল লেখক যদি তার কথা না শোনে, তাহলে তাকে মারধর করে অফিস থেকে বের করে দেন। সরকারি অফিস যেন তার নিজস্ব বাসা-বাড়ি!
কেউ কথা বললে, তার শালীদের দিয়ে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে লোকজনকে লাঞ্ছিত করা হয়। আগে তিনি ১৪০০ টাকার একটি টিনসেট ঘরে ভাড়া থাকতেন, আর এখন রায়েরবাগ কদমতলীতে তার রয়েছে তিন থেকে চারটি বাড়ি, তিন কাঠা, পাঁচ কাঠা ও দুই কাঠার খালি প্লট। তিনি নিজেও জমির ব্যবসা করেন।
কি করে এত টাকা কামিয়েছেন মফিজ?—জালিয়াতি করে দলিল বানিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তার রয়েছে নিজস্ব বাহিনী এবং একাধিক চেম্বার। নিরব ভূমিকা পালন করছে ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রার। ক্ষমতার প্রভাব খাটানো মফিজের হাত থেকে মুক্তি চায় সাধারণ মানুষ।
তাদের প্রশ্ন, “কি করে এই মফিজ এত টাকার মালিক হলো?” বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশন—দুদকের হস্তক্ষেপ দাবি করে স্থানীয়রা বলছেন, মফিজকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক।