স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এবং সাবেক সংসদ সদস্য জয়নুল আবেদিন ফারুক বলেছেন, “শাহাবুদ্দিন আহমেদের সময়কার চেয়েও ভালোভাবে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করতে না পারলে তার ব্যর্থতার দায় বর্তাবে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ওপরই।”
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র ও জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা: অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনই আমাদের প্রত্যাশা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার প্রত্যাশা
ফারুক বলেন, “নির্বাচনের রূপরেখা নিয়ে আমি আশাবাদী। তবে নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা হলে আরও বেশি আত্মবিশ্বাস আসবে।”
তিনি বলেন, “যারা অতীতে বিতর্কিত ভূমিকা রেখেছেন, বিশেষ করে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে জড়িত পুলিশ কর্মকর্তারা—তাদের যেন লটারির মাধ্যমে বদলির তালিকায় রাখা না হয়।”
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সাম্প্রতিক প্রস্তাব—এসপি ও ওসিদের বদলিতে লটারির পদ্ধতি চালুর—তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, “এটা হাস্যকর। যারা ভোট ডাকাতিতে যুক্ত ছিলেন, তারা যেন কোনোভাবেই ভবিষ্যতের নির্বাচনে দায়িত্বে না থাকেন।”
গণতন্ত্র হত্যাকারীদের দায় তোলার আহ্বান
ফারুক আরও বলেন, “যারা গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়ে মানুষ হত্যা করেছে, তারা এখনো কি পুলিশের চাকরিতে বহাল? এ বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার।”
তিনি বলেন, “এই কর্মকর্তারাই আমাদের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, নির্বাচনী ব্যবস্থাকে কলঙ্কিত করেছে।”
ব্যক্তিগত স্মৃতি ও কষ্টের ভাগ
আবেগঘন স্মৃতিচারণায় ফারুক বলেন, “২০০৮ সালে আমি কারাগারে থাকাকালীন আমার মা মারা যান। কিন্তু প্যারোলে মুক্তি না পাওয়ায় আমি আমার মায়ের মুখ শেষবারের মতো দেখতে পারিনি। এটা আমার জীবনের সবচেয়ে মর্মান্তিক অধ্যায়।”
তিনি প্রয়াত রাজনীতিক শাহজাহান সিরাজের একটি উক্তি উদ্ধৃত করে বলেন, “রাজনীতিতে টিকে থাকতে হলে অনেক কিছু হারাতে হয় এবং সবকিছু ভুলে যেতে হয়।”
রাজনীতি কার? জনগণের না ব্যক্তির?
শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে তার পুরোনো এক মন্তব্য পুনরুল্লেখ করে ফারুক বলেন, “শেখ মুজিব যুদ্ধ দেখেননি, বুদ্ধিজীবী হত্যার কান্নাও দেখেননি। তার উচিত ছিল জ্ঞানী ও গুণীজনদের দিয়ে দেশ পরিচালনা করা।”
তিনি আরও বলেন, “রাজনীতি কোনো ব্যক্তির সম্পত্তি নয়, এটা জনগণের। বাংলাদেশের রাজনীতিতে সততার ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। আর বেগম খালেদা জিয়া হচ্ছেন আপসহীন নেত্রী।”
স্বৈরাচার ও গণতন্ত্র ধ্বংসের অভিযোগ
সরকার প্রধান শেখ হাসিনার উদ্দেশে ফারুক বলেন, “আপনি যদি গণতন্ত্র ধ্বংস না করতেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস না করতেন, আর বেগম জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা না দিতেন—তাহলে আজ আপনাকে পালিয়ে যেতে হতো না।”
সভাপতি ও প্রধান আলোচকের বক্তব্য
সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স কাউন্সিলের সভাপতি আলী আশরাফ আকন্দ।
প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব।