মোঃ ফজলুল করিম সেলিম:
একজন সৎ, দক্ষ, মেধাবী, আদর্শবান, উজ্জ্বল নক্ষত্র ব্যক্তিত্ব বাংলাদেশ ক্রিকেট আম্পায়ার্স এন্ড স্কোরার্স অ্যাসোসিয়েশন-এর সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান। তিনি মালিটোলার স্থায়ী বাসিন্দা। তার পিতা মৃত আব্দুল করিম একজন ব্যবসায়ী এবং মাতা ইবাদন নেছা একজন গৃহিণী ছিলেন। তিনি ১৯৯২ সালে সর্বপ্রথম বাংলাদেশ ক্রিকেট আম্পায়ার্স এন্ড স্কোরার্স অ্যাসোসিয়েশনে যোগদান করেন।
তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট আম্পায়ার্স এন্ড স্কোরার্স অ্যাসোসিয়েশনে যোগদানের পর থেকে সাংগঠনিক কার্যক্রমগুলো অত্যন্ত সুনিপুণ ও দক্ষতার সাথে সকল সাংগঠনিক কাজে গতিশীল করার জন্য নিরলসভাবে শ্রম দিয়ে আসছেন। আজ অবধি তার সাংগঠনিক দক্ষতা ও কার্যক্রমের ফলে বাংলাদেশ ক্রিকেট আম্পায়ার্স এন্ড স্কোরার্স অ্যাসোসিয়েশন দেশ ও বিদেশে ব্যাপক সুনাম লাভ করে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট আম্পায়ার্স এন্ড স্কোরার্স অ্যাসোসিয়েশন-এর সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান বাংলাদেশ ক্রিকেট আম্পায়ার্স এন্ড স্কোরার্স অ্যাসোসিয়েশনে বড়-ছোট সকলের কাছে শ্রদ্ধেয় ও আস্থাবান ব্যক্তি হিসাবে পরিচিত। তিনি একজন সমাজসেবক হিসাবেও ব্যাপক পরিচিত আছেন।
তার উদ্যোগে ১৯৮৬ সালে সুরিটোলা রাইট ব্রাদার্স নামে একটি ক্রীড়া সংগঠন যাত্রা শুরু করে। এই সংগঠনে বর্তমানে তিনি সেক্রেটারি হিসাবে নিয়োজিত আছেন এবং সংগঠনের সকল কার্যক্রমগুলো তিনি সুনিপুণভাবে পরিচালনা করছেন।
অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান সম্প্রতি আমাদের স্বাধীন সংবাদের সিটি রিপোর্টার মোঃ ফজলুল করিম (সেলিম)-এর একান্ত সাক্ষাৎ দেন। তা নিম্নে তুলে ধরা হলো—
১। প্রশ্ন: কত সালে আম্পায়ার্স এন্ড স্কোরার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাথে যুক্ত হন?
উত্তর: ১৯৯২ সালে সর্বপ্রথম আম্পায়ার্স এন্ড স্কোরার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাথে যুক্ত হই।
২। প্রশ্ন: তখন আম্পায়ার্স এন্ড স্কোরার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাথে সম্পর্ক কেমন ছিল?
উত্তর: তখন বিসিবির সাথে আমাদের সম্পর্ক খুবই ভালো ছিল।
৩। প্রশ্ন: আপনি পদবী পাওয়ার পর এই আম্পায়ার্স এন্ড স্কোরার্স অ্যাসোসিয়েশনের জন্য কী কী কাজ করেছেন?
উত্তর: আমি পদবী পাওয়ার পর আম্পায়ার্স এন্ড স্কোরার্স অ্যাসোসিয়েশনের ১০টির মতো স্মরণিকা এবং ১টি ডিরেক্টরি বই প্রকাশ করি। তাছাড়া প্রতি বছর ইফতার পার্টি, পিকনিক, এজিএমসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান করি।
৪। প্রশ্ন: আপনি আম্পায়ার্স এন্ড স্কোরার্স অ্যাসোসিয়েশনে যখন যুক্ত হন, তখন এবং বর্তমানে সময়ের কার্যকলাপের মূল্যায়ন করবেন?
উত্তর: তখন বাংলাদেশ ক্রিকেট আম্পায়ার্স এন্ড স্কোরার্স অ্যাসোসিয়েশনের বিসিবির উপর একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল। বিসিবির আম্পায়ার্স কমিটিতে অ্যাসোসিয়েশনের ২ থেকে ৩ জন সদস্য থাকত এবং তখন আম্পায়ারদের অ্যালটমেন্ট থেকে শুরু করে আম্পায়ারদের বেতনসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ডে মুখ্য ভূমিকা পালন করতেন আম্পায়ার্স অ্যাসোসিয়েশন। আর বর্তমানে বাংলাদেশ ক্রিকেট আম্পায়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাথে বিসিবি আম্পায়ার্স কমিটির বিমাতা-সুলভ আচরণ করে। অথচ আম্পায়ার ও স্কোরারদের স্বার্থ রক্ষার জন্য অ্যাসোসিয়েশন সর্বাত্মক চেষ্টা করেও কোনো সুফল পায়নি। যার মূলে রয়েছেন বিসিবির আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান জনাব মিঠু সাহেব; তিনি শুরু থেকে অদ্যাবধি আম্পায়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাথে বৈরী আচরণ করে আসছেন।
৫। প্রশ্ন: আপনাদের অ্যাসোসিয়েশন থেকে যারা নতুন, তাদেরকে কীভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেন?
উত্তর: তাদের মনোবল বৃদ্ধির জন্য সিনিয়ররা রিফ্রেশার্স কোর্স করান, ফিটনেস বজায় রাখার জন্য ফিটনেস কোর্স করান এবং গ্রুপ ডিসকাশনের ব্যবস্থা করেন।
৬। প্রশ্ন: আপনি আম্পায়ার্স অ্যাসোসিয়েশন থেকে কোন কোন দেশ সফর করেছেন?
উত্তর: আম্পায়ার্স এন্ড স্কোরার্স অ্যাসোসিয়েশনের ৩১ সদস্যবিশিষ্ট দল নেপাল সরকারের আমন্ত্রণে নেপালে ১২ দিনব্যাপী সফরে যায়। সেখানে আম্পায়ার্স এন্ড স্কোরার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাথে মতবিনিময় করা হয় এবং তাদের এ.সি.সি. আম্পায়ার বুদ্ধিপ্রধান এবং দেবেন্দ্রসহ আরো আম্পায়ারদের আতিথেয়তা আমাদেরকে মুগ্ধ করে। তাছাড়া ৬ সদস্যবিশিষ্ট দলসহ আমি কলকাতার আম্পায়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের আমন্ত্রণে সেখানে অবস্থান করি এবং সৌরভ গাঙ্গুলির আতিথেয়তা আমাদেরকে মুগ্ধ করে। তাদের টিভি চ্যানেল আমাদের সফরের উপর সংবাদ পরিবেশন করে। এছাড়াও নেপাল, ভারত ও পাকিস্তানের আম্পায়াররা বাংলাদেশে আসেন।
৭। প্রশ্ন: বিসিবি কি আপনাদের সদস্যদের যথাযথ মূল্যায়ন করে? আপনার মতামত?
উত্তর: বিসিবির মূল কমিটি আম্পায়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে আম্পায়ার্স এন্ড স্কোরারদের যথাযথ মূল্যায়ন করলেও বর্তমানে বিসিবির আম্পায়ার্স কমিটি অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ছাড়া গঠিত; তারা কখনোই আম্পায়ার ও স্কোরারদের স্বার্থ সংরক্ষণে নিয়োজিত নয়।
৮। প্রশ্ন: আপনি আম্পায়ার্স এন্ড স্কোরার্স অ্যাসোসিয়েশনের বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক—এই অ্যাসোসিয়েশনের সাথে অন্য দেশের তুলনা কেমন?
উত্তর: আমাদের আম্পায়ার্স এন্ড স্কোরার্স অ্যাসোসিয়েশন শুধু রাজধানীকেন্দ্রিক নয়, আমাদের এই অ্যাসোসিয়েশনের বাংলাদেশের ৬৪টি জেলা শাখা এবং ৮টি বিভাগীয় কমিটি রয়েছে। যা অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা অনেক সমৃদ্ধ।
৯। প্রশ্ন: এই অ্যাসোসিয়েশনকে আন্তর্জাতিক মানের করার উদ্যোগ আছে কি?
উত্তর: আমরা প্রথমে সার্ক আম্পায়ার্স এন্ড অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠায় চেষ্টা করে যাচ্ছি। আইসিসির সকল দেশকে নিয়ে আম্পায়ার্স এন্ড স্কোরার্স অ্যাসোসিয়েশন গঠন করা হবে।
১০। প্রশ্ন: তরুণ ও মেধাবীরা যারা অর্থের অভাবে আম্পায়ার্স এন্ড স্কোরার্স অ্যাসোসিয়েশনে যোগ দিতে পারছে না, তাদের জন্য আপনার করণীয় কী?
উত্তর: বর্তমানে আম্পায়ার্স এন্ড স্কোরার্স-এর পরীক্ষা বিসিবি গ্রহণ করে এবং বিসিবির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর আমাদের অ্যাসোসিয়েশনে আবেদন করলে আমরা তাকে সহযোগী সদস্য হিসাবে গ্রহণ করি। তিন বছর অতিবাহিত হলে নির্বাহী কমিটির মিটিংয়ে সক্রিয় সদস্য হিসাবে গ্রহণ করা হয়। এক্ষেত্রে দরিদ্র ও মেধাবীদের বাৎসরিক চাঁদা মওকুফ করে দেওয়া হয়।
১১। প্রশ্ন: আপনার কিছু স্মরণীয় ঘটনা বর্ণনা করুন।
উত্তর: ২০২৪ সালের বাংলাদেশ ক্রিকেট আম্পায়ার্স এন্ড স্কোরার্স নির্বাচনে এলিট প্যানেল আম্পায়ার জনাব শরফত উল্লাহ ইবনে সৈকতকে পরাজিত করা।