মো: সিফাত হোসাইন গাজী:
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ডেমরা থানার আমতলা এলাকার বাসিন্দা মোঃ খালেদ মাসুদ দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে স্বৈরাচারী আওয়ামী যুবলীগের ছায়ায় থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। সাংবাদিক পরিচয় ভুয়া হিসেবে ব্যবহার করে তিনি ডেমরা ও নারায়ণগঞ্জ এলাকায় চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও মাদক ব্যবসায়ীদের গডফাদার হিসেবে পরিচিত।
একটি তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ২-৩ বছরে মোঃ খালেদ মাসুদ ৫ থেকে ৬টি ভিন্ন সাংবাদিক পরিচয়ের আইডি কার্ড ব্যবহার করেছেন। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো, কোনো পত্রিকায় তার লেখা কোনো সংবাদ প্রকাশিত হয়নি। তৎকালীন স্বৈরাচার সরকারের আমলে ডেমরা থানার ওসির সাথে যোগসাজশ করে তিনি মামলা বাণিজ্য করতেন।
তবে তার অবৈধ কর্মকাণ্ড এখানেই শেষ নয়। স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রতি তার আচরণ ছিল অত্যন্ত নির্মম; প্রতি বছর দুই ঈদে তাদের বাড়িতে নামাজ পড়া ও সেমাই খাওয়া পর্যন্ত বাধাগ্রস্ত হতো।
২০১৮ সালে ডেমরা থানা ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের নিয়ন্ত্রণে আসার পর থেকে মোঃ খালেদ মাসুদ বহুতল নতুন নির্মাণ ভবনের মালিকদের কাছ থেকে বিপুল নগদ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন।
তার অজানা নয়, তার চাচা অনেক আগে থেকেই প্রবাসে বসবাস করতেন এবং চাচার বাড়ির দলিলপত্র তার নিকটেই ছিল। মোঃ খালেদ মাসুদ কিছু দিন আগে তার চাচাতো বোনকে বাসা থেকে বের করে দেয় এবং সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে দুই-তিন দিন পর চার লক্ষ টাকা নিয়ে এসে থানার ওসি ও কাউন্সিলরের মাধ্যমে সেই বাড়িটি দখল করার পরিকল্পনা করেছিল।
স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর ৫ আগস্ট থেকে মোঃ খালেদ মাসুদের দেখা মেলেনি। জানা গেছে, তিনি বৈষম্যের ছাত্র বিরোধী আন্দোলনের মামলার আসামি। এই মামলাটি যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের, মামলা নম্বর ৯০, যেখানে তিনি আসামি নম্বর ৬৫।
এই তথ্যের পরিপ্রেক্ষিতে ডেমরা প্রেসক্লাব মোঃ খালেদ মাসুদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে। তদন্তে তারা জানতে পারে, তিনি ডেমরা প্রেসক্লাবের নিয়মনীতি অমান্য করেছেন এবং বিভিন্ন সময়ে বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে তথ্য সংগ্রহ করে আওয়ামীলীগকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহায়তা করেছেন।
ফলস্বরূপ, ২৬ জুলাই ২০২৫ তারিখে ডেমরা প্রেসক্লাব তাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করে।
মোঃ খালেদ মাসুদের অবৈধ কর্মকাণ্ড ও যুবলীগের ছত্রছায়ায় কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া নিয়ে স্থানীয় সাধারণ জনগণ ক্ষুব্ধ ও উদ্বেগ প্রকাশ করছে। তারা আশা করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে এবং পারদর্শী ও সৎ নেতাদের পদে আসার সুযোগ সৃষ্টি করবে।