জনকল্যাণমূলক কাজের অগ্রদূত এম এ কাশেম

কামরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম:


লোহাগাড়া উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের মানুষের মধ্যে মানবতার অগ্রদূত হিসেবে পরিচিত এম এ কাশেম দীর্ঘদিন ধরে জনকল্যাণমূলক কাজ করে যাচ্ছেন। মা-মণি হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তিনি শুধু স্বাস্থ্যসেবা নয়, বরং এতিমখানা, মাদ্রাসা ও মসজিদ নির্মাণসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার মাধ্যমে এলাকার মানুষের জীবনে অসাধারণ অবদান রেখে যাচ্ছেন।

বর্তমানে লোহাগাড়ায় অনেক হাসপাতাল থাকলেও জনস্বাস্থ্য ও জনকল্যাণমূলক কাজের দিক থেকে মা-মণি হাসপাতাল আলাদা মর্যাদার অধিকারী। এম এ কাশেম বলেন, “প্রথমেই রোগীদের সেবার শতভাগ নিশ্চয়তা দিতে হবে, তারপর টাকার কথা ভাবতে হবে। টাকা না থাকায় গরীব রোগীদের চিকিৎসা বঞ্চিত করা কখনো কাম্য নয়। মা-মণি হাসপাতাল কোনও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান নয়, এটি একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান যেখানে রোগীরা বিনা টাকায়ও সেবা পায়।”

তবে এই সুনামকে ক্ষুণ্ন করার জন্য কিছু মহল ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন এম এ কাশেম। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার ও কুৎসা রটানো হচ্ছে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত নন এবং তার সব কাজ জনকল্যাণমূলক এবং ব্যবসায়িক দায়িত্বের আওতায় সম্পন্ন হচ্ছে।

পদুয়া ইউনিয়নের বাগমোয়া এলাকার মানুষ বলছেন, এম এ কাশেম লোহাগাড়ার মানুষের জন্য এক বিরল মানবিক ব্যক্তিত্ব। তিনি নিজেও এক দুর্দশাগ্রস্থ পরিবার থেকে উঠে এসে আজ মানবতার মিশন বাস্তবায়নে কাজ করছেন।

মা-মণি হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা এম এ কাশেমের জীবন সংগ্রামের পটভূমি হৃদয়স্পর্শী। মাত্র আড়াই বছর বয়সে মায়ের হাতছাড়া হয়ে এতিম হন। মায়ের অসুস্থতা সময় টাকা না থাকায় উন্নত চিকিৎসা দিতে পারেননি। অনেক চেষ্টা করেও তাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত অনাহার-অনাদরে জীবন কাটিয়ে তিনি শিক্ষালাভ করেন ও বিভিন্ন চাকরিতে নিয়োজিত হন।

মায়ের মৃত্যু ও কঠিন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এম এ কাশেমের মনস্থির হয়—“কেউ যেন চিকিৎসার অভাবে প্রিয়জন হারায় না।” এই স্বপ্নকে বাস্তবায়নে ২০০৪ সাল থেকে লোহাগাড়া মা-মণি হাসপাতালের যাত্রা শুরু করেন। আজ এই হাসপাতাল ১৩ বছর ধরে নিবিড় স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে সুপরিচিত।

তিনি ৬ তলা বিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতালের নির্মাণ সম্পন্ন করেছেন, যেখানে ১০০ শয্যা রয়েছে। মা-মণি হাসপাতাল বিভিন্ন দেশে, বিশেষ করে চিন ও ভারতসহ উন্নত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে নিয়মিত অভিজ্ঞ চিকিৎসক আনয়ন করছে। ঈদের পর নতুন ভবনের উদ্বোধনের মাধ্যমে লোহাগাড়াবাসী আধুনিক ও উন্নত চিকিৎসাসেবা পাবে বলে আশা করছেন সকলেই।

এই হাসপাতালকে ঘিরে এলাকার মানুষের ভালোবাসা ও আস্থা দৃঢ়। এম এ কাশেমের মানবিক কর্মকাণ্ড লোহাগাড়া তথা সমগ্র চট্টগ্রাম অঞ্চলের জন্য এক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

শেষ কথা:
জনকল্যাণে নিবেদিত প্রাণ এম এ কাশেমের মতো মানুষ সমাজের অন্ধকারে আলো জ্বালায়। তার সংগ্রাম ও সেবামূলক কাজ লোহাগাড়ার মানুষের কাছে মানবতার এক সোনালী অধ্যায়। আশা করা যায়, তার প্রচেষ্টা ও উন্নত চিকিৎসা সেবা আরও বিস্তৃত হবে এবং বেশি মানুষের পাশে দাঁড়াতে সক্ষম হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *