স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:
অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করতে যাচ্ছে মালয়েশিয়ার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি কেবাংসান মালয়েশিয়া (ইউকেএম)। সফরকালীন এই ডিগ্রি প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বিশেষ স্মারক বক্তৃতা দেবেন তিনি।
রোববার (১১ আগস্ট) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া উইং) শাহ আসিফ রহমান সাংবাদিকদের জানান, অধ্যাপক ইউনূসের এই সম্মাননা অনুষ্ঠান মালয়েশিয়া সফরের তৃতীয় দিনে, অর্থাৎ ১৩ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে। এদিন তিনি ইউকেএমের চ্যান্সেলর এবং নেগেরি সেম্বিলান প্রদেশের শাসক তুয়াংকু মুহরিজ ইবনি আলমারহুম তুয়াংকু মুনাওয়িরের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ রোববার বিকেলে তিন দিনের সরকারি সফরে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন। দুপুর ২টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তিনি কুয়ালালামপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। তাঁর সঙ্গে সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি আনোয়ার ইব্রাহিমের আমন্ত্রণে এই সফরে যাচ্ছেন অধ্যাপক ইউনূস। ৩ দিনের এ সফরে দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা, জ্বালানি, হালাল খাদ্য উৎপাদন ও বাণিজ্যসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাতে সহযোগিতা জোরদার করার উদ্দেশ্যে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরের পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া তিনটি নোট বিনিময় হবে, যা দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, সফরকালে ড. ইউনূস মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করবেন। পাশাপাশি তিনি দেশটির মন্ত্রিপরিষদের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ও বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। এতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ, বিশেষ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, হালাল খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, আইটি এবং উচ্চশিক্ষা খাতে মালয়েশিয়ার সম্পৃক্ততা বাড়ানোর বিষয়ে জোর দেওয়া হবে।
এ ছাড়া, প্রধান উপদেষ্টা মালয়েশিয়ায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির প্রতিনিধিদের সঙ্গেও মতবিনিময় করবেন। সেখানে প্রবাসীদের সমস্যা, অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিদেশ সফর। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সফর শুধু অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক নয়, বরং শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া সম্পর্ককে আরও গভীর করবে।