সরকারের অস্বচ্ছ নীতি নির্দেশনা ওষুধ শিল্পে ঝুঁকি তৈরি করেছে: মির্জা ফখরুল

স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক: 

সরকারের অস্বচ্ছ এবং একপেশে নীতি-নির্দেশনার কারণে দেশের ওষুধ শিল্পে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রায় দুই বছর যাবৎ নতুন কোনো ওষুধের নিবন্ধন দেওয়া হয়নি। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে ওষুধের মূল্য সমন্বয়ও করা হয়নি।

মির্জা ফখরুল বলেন, “সরকার গঠিত ওষুধ নিয়ন্ত্রণ কমিটি (ডিসিসি), অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা প্রণয়নে কাজ করা টাস্কফোর্স কমিটি এবং ডিসিসির টেকনিক্যাল সাব কমিটিতে বাংলাদেশ ওষুধশিল্প সমিতির কোনো প্রতিনিধি রাখা হয়নি। এটি শিল্পের স্বার্থবিরোধী।”

তিনি আরও বলেন, “ওষুধশিল্পের নীতি প্রণয়ন ও উন্নয়নে স্বচ্ছতা এবং অংশগ্রহণমূলক সিদ্ধান্ত অপরিহার্য। এই খাতের সঙ্গে জড়িত সব পক্ষের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে সমাধান খুঁজে বের করাই সরকারের জন্য শ্রেয়। শিল্প উদ্যোক্তাদের বাদ দিয়ে কোনো কমিটি গঠন বা নীতি প্রণয়ন সমর্থনযোগ্য নয়। এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পরিপ্রেক্ষিতে এই শিল্পের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি।”

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের ওষুধশিল্প দেশের অর্থনীতি, জনস্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। দেশীয় চাহিদার প্রায় ১০০% ওষুধ স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয়। এছাড়া, বাংলাদেশি ওষুধ যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া সহ ১৬০টিরও বেশি দেশে রফতানি হয়। এই খাত এপিআই (অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রিডিয়েন্ট) উৎপাদনেও সক্ষমতা অর্জন করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, বিএনপি শাসনামলে ওষুধশিল্পের উন্নয়নে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে ১৯৯৪ সালে ওষুধের মূল্যনীতি প্রণয়ন, ২০০২ সালে জাতীয় ওষুধ নীতি হালনাগাদ, ২০০৩ সালে ওষুধ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষকে শক্তিশালী করা, ট্রিপস ছাড়ের সুযোগ কাজে লাগিয়ে সাশ্রয়ী জেনেরিক ওষুধ উৎপাদন, রফতানি প্রণোদনা এবং গবেষণায় বিনিয়োগ বৃদ্ধি।

মির্জা ফখরুল বলেন, “গত দুই বছর ধরে নতুন কোনো ওষুধ নিবন্ধন দেওয়া হয়নি এবং ওষুধের মূল্য সমন্বয়ও করা হয়নি। এতে ট্রিপস ওয়েভার সুবিধা হারানোর ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে। তাই নতুন ওষুধ নিবন্ধন দ্রুত শুরু করা জরুরি।”

বিএনপি আশা করছে, সরকার ওষুধশিল্পের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে শিল্পবান্ধব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *