আগস্টের প্রথম ১২ দিনে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি—১০৫ কোটি ৪০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স দেশে

স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:

চলতি বছরের আগস্টের প্রথম ১২ দিনেই দেশে এসেছে ১০৫ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বুধবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, আগস্টের প্রথম ১২ দিনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো এই অর্থের পরিমাণ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। ২০২৪ সালের আগস্টের প্রথম ১২ দিনে দেশে এসেছিল ৭২ কোটি ১০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স। অর্থাৎ, এক বছরের ব্যবধানে প্রবাসী আয় বেড়েছে প্রায় ৩৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪ হাজার ৬৩ কোটি টাকা বেশি। এ হিসাবে রেমিট্যান্স প্রবাহের প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৪ শতাংশে।

জুলাই মাসেও ইতিবাচক ধারা

এর আগে সদ্যসমাপ্ত জুলাই মাসে (২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাস) দেশে এসেছিল ২৪৭ কোটি ৭৯ লাখ ১০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৩০ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা। তবে ওই মাসে ৮টি ব্যাংকের মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি। এসব ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল) ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব)। বেসরকারি খাতে কমিউনিটি ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংক এবং বিদেশি ব্যাংকের মধ্যে হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান ও স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।

আগের অর্থবছরের রেকর্ড

বিগত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসী আয়ের ধারা ছিল উল্লেখযোগ্য। ওই অর্থবছরের মার্চ মাসে সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স দেশে আসে, যা ছিল বছরের রেকর্ড। পুরো অর্থবছর জুড়ে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই আয় ছিল ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার।

মাসওয়ারি রেমিট্যান্স চিত্র (২০২৪-২৫ অর্থবছর)

• জুলাই: ১৯১ দশমিক ৩৭ কোটি ডলার

• আগস্ট: ২২২ দশমিক ১৩ কোটি ডলার

• সেপ্টেম্বর: ২৪০ দশমিক ৪১ কোটি ডলার

• অক্টোবর: ২৩৯ দশমিক ৫০ কোটি ডলার

• নভেম্বর: ২২০ কোটি ডলার

• ডিসেম্বর: ২৬৪ কোটি ডলার

• জানুয়ারি: ২১৯ কোটি ডলার

• ফেব্রুয়ারি: ২৫৩ কোটি ডলার

• মার্চ: ৩২৯ কোটি ডলার

• এপ্রিল: ২৭৫ কোটি ডলার

• মে: ২৯৭ কোটি ডলার

• জুন: ২৮২ কোটি ডলার

বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ

অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকিং খাতের বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সরকার ঘোষিত প্রণোদনা এবং প্রবাসী আয়ের চ্যানেল সহজীকরণ রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধিতে মুখ্য ভূমিকা রাখছে। হুন্ডির বদলে বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় এই ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, উৎসব মৌসুম, বিশেষ করে কোরবানির ঈদ ও সামাজিক অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রবাসীদের দেশে টাকা পাঠানোর প্রবণতা আরও বেড়েছে, যা আগস্টের শুরুতেই বড় অঙ্কের রেমিট্যান্স প্রবাহে প্রভাব ফেলেছে।