স্বাধীন আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গাজার জায়তুন এলাকায় গত তিন দিনে ৩০০টিরও বেশি বাড়ি ধ্বংস করেছে ইসরাইলি সেনারা। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, এটি দখল পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই ইসরাইলি বাহিনী এই অভিযান পরিচালনা করছে।
গাজার সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বুধবার জানান, ইসরাইলি বাহিনী জায়তুনে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে এবং ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক আবাসিক এলাকা টার্গেট করেছে। তিনি বলেন, সেনারা বিশেষ করে পাঁচতলা বা তার বেশি উঁচু ভবনকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। ব্যবহৃত শক্তিশালী বিস্ফোরকের কারণে শুধু লক্ষ্যবস্তু ভবনই নয়, আশপাশের অনেক বাড়িঘরও ধসে পড়েছে।
সিভিল ডিফেন্সের তথ্য অনুযায়ী, কিছু বাড়ি বাসিন্দারা ভেতরে থাকা অবস্থায় উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, ফলে বহু হতাহত হয়েছেন। ধ্বংসযজ্ঞ শুরু হওয়ার আগে কোনো ধরনের সতর্কতা দেওয়া হয়নি। তীব্র গোলাবর্ষণের কারণে উদ্ধারকর্মীরা আহতদের কাছে পৌঁছাতে পারেননি, ফলে অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন।
গাজার অধিবাসীরা বলছেন, এই ধরনের পরিকল্পিত ধ্বংস অভিযানের মূল উদ্দেশ্য হলো সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত করে এলাকা ছাড়তে বাধ্য করা এবং পরবর্তীতে দখল কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরাইল গাজায় ৬১ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। এই বিপুল পরিমাণ প্রাণহানিকে কেন্দ্র করে তেল আবিবের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ ক্রমেই জোরদার হচ্ছে।
এর আগে, ২০২৪ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের দায়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
এ ছাড়া, গাজায় চলমান যুদ্ধের জন্য ইসরাইল বর্তমানে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার মামলার মুখোমুখি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো ইসরাইলের এই কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে এবং তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছে।