ওয়ান ইলেভেনের মিথ্যা ইতিহাস উন্মোচনের আহ্বান মঈন খানের

স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান আহ্বান জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের ‘ওয়ান ইলেভেন’ উদ্যোগের মিথ্যা ইতিহাসের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে। শনিবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর প্রেস ক্লাবে জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থান ও ফ্যাসিবাদ পতনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, “মিথ্যা ইতিহাস যেটা ওয়ান ইলেভেনের নামে আওয়ামী লীগ সৃষ্টি করেছে, সেই ইতিহাসের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে। পরবর্তীতে ভোটার লিস্ট করা হয়েছিল—এটি সত্য। কিন্তু সেই ভোট ছিল সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রিত। ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে ৩০০ আসনে কে কোথায় নির্বাচিত হবে সেটার পূর্বনকশা তৈরি করা হয়েছিল। সেভাবেই বাংলাদেশে ওয়ান ইলেভেনের প্রক্রিয়া গড়ে তোলা হয়েছিল।”

তিনি আরও বলেন, “ওয়ান ইলেভেনের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশে একটি সরকার প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল। ফলশ্রুতিতে পরবর্তী ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ দেশের সব দিক ধ্বংস করেছে। শিক্ষা ব্যবস্থাও পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। শেখ হাসিনার আমলে বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে ঢালাওভাবে মামলা করা হয়েছে। প্রায় ৫০ লাখ বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে দেশের মানুষ কখনও আধিপত্যবাদ মেনে নেয়নি।”

নির্বাচনের প্রসঙ্গে ড. মঈন খান বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন করার কথা জানিয়েছে। নির্বাচন কমিশন শিডিউল ঘোষণা করে ভোটের তারিখ দেবে, এমনটাই আমরা আশা করি। আমরা চাই নির্বাচন সম্পূর্ণ সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্যভাবে অনুষ্ঠিত হোক। দেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য এটি অত্যন্ত জরুরি।”

বিএনপির এই নেতা জানান, দেশকে ধ্বংস করা হয়েছে কেবল প্রশাসনিক ও রাজনৈতিকভাবে নয়, সামাজিক ও শিক্ষাগত দিক থেকেও। তিনি মনে করান, ওয়ান ইলেভেনের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শুধু সরকারই প্রতিষ্ঠিত হয়নি, একইসাথে দেশের সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক দলগুলোও নানা ধরনের বাধার মুখোমুখি হয়েছে।

ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, “আজকের সভার মূল উদ্দেশ্য হলো দেশের ইতিহাসকে সঠিকভাবে সামনে আনা। জনগণকে জানানো যে ওয়ান ইলেভেন কেবল একটি রাজনৈতিক ঘটনা নয়, এটি পরিকল্পিতভাবে দেশের গণতান্ত্রিক ও প্রশাসনিক কাঠামোকে ক্ষতিগ্রস্ত করার একটি প্রক্রিয়া ছিল।”

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির অন্যান্য নেতা ও রাজনৈতিক বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। তারা সবাই একমত হয়েছেন যে, দেশের সুষ্ঠু নির্বাচন এবং গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা ছাড়া কোনো উন্নয়ন ও স্থায়িত্ব সম্ভব নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *