আনুষ্ঠানিকভাবে নবীনদের বরণ করে নিল নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়

মাহমুদা আক্তার নাঈমা:

২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির নবীন শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে নিল জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় (নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়)।

রোববার (১৭ আগস্ট ২০২৫) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত টিএসটি ভবনে এই ওরিয়েন্টেশনের আয়োজন করা হয়। এ সময় সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম।

তিনি নবীনদের উদ্দেশে বলেন, “তোমরা মেধার স্বাক্ষর রেখে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছো। সেই মেধাকে কাজে লাগিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। তোমাদের দক্ষতা অর্জন করতে হবে এবং যোগ্য নাগরিক হয়ে গড়ে উঠতে হবে। যেই বিষয়ে ভর্তি হয়েছো, সেই বিষয়ে কৃতিত্ব রাখতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “একজন শিক্ষার্থী যদি প্রথম থেকেই নিয়মিতভাবে প্রতিটি ক্লাস করে, তবে তার শতকরা ৫০ ভাগ পড়া ক্লাসেই শেষ হয়ে যায়। অবশিষ্ট ৫০ ভাগ পূরণ করতে হয় লাইব্রেরি, সেমিনার লাইব্রেরি ও অন্যান্য উৎস থেকে। সেমিস্টারের শুরুতে পিছিয়ে পড়লে পরে অনেক কষ্ট করতে হয়। তাই শুরু থেকেই মনোযোগী হতে হবে।”

পরিশ্রমের গুরুত্ব উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, “পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি। যারা কষ্ট করে নিজেদের তৈরি করেছে এবং টিউশনি করেছে, তারাই আজ ভালো অবস্থানে রয়েছে। তোমাদের প্রতি পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের অনেক প্রত্যাশা রয়েছে—আমি আশা করি তোমরা সেই প্রত্যাশা পূরণ করবে।”

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, “শুধু সনদ পাওয়ার জন্য পড়াশোনা করলে হবে না, জ্ঞানার্জন করতে হবে। বিদেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ থাকলেও বাবা-মায়ের প্রতি দায়িত্ব ভুলে যাওয়া উচিত নয়। রেজাল্ট ভালো হলেও যদি দায়িত্ববোধ না থাকে তবে সেই সনদে খাদ থেকে যায়। জ্ঞানী হতে হবে, তবে জ্ঞানপাপী হওয়া যাবে না।”

তিনি আরও বলেন, “২০২৪ সালের জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীরা দেখিয়ে দিয়েছে তারা কী করতে পারে। বিধ্বস্ত বাংলাদেশ থেকে নতুন বাংলাদেশ গঠনে তারা বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছে। সুতরাং তোমাদেরও দেশপ্রেমিক হয়ে দেশের জন্য নিবেদিত প্রাণ হয়ে উঠতে হবে।”

নবীন শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে অনুভূতি প্রকাশ করেন আইন ও বিচার বিভাগের হুমায়রা মিজান ইন্সিতা এবং ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের মো. রবিউল ইসলাম। অনুষ্ঠানের শুরুতে নবীন শিক্ষার্থীদের হাতে রজনীগন্ধার স্টিক তুলে দিয়ে বরণ করা হয়। পরে তাঁদের ফোল্ডার, নোটবুক, কলম ও একাডেমিক ক্যালেন্ডার দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. জয়নুল আবেদীন সিদ্দিকী, কলা অনুষদের ডিন ও ওরিয়েন্টেশন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইমদাদুল হুদা, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন ও কমিটির সদস্য-সচিব অধ্যাপক ড. এ এইচ এম কামাল, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাখাওয়াত হোসেন সরকার, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. বখতিয়ার উদ্দিন, চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ এমদাদুর রাশেদ, আইন অনুষদের ডিন মুহাম্মদ ইরফান আজিজ, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালক ড. মো. আশরাফুল আলম এবং প্রক্টর ড. মো. মাহবুবুর রহমান।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান। সঞ্চালনা করেন ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক মো. জিল্লাল হোসাইন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *