প্রভাস চক্রবর্ত্তী, বোয়ালখালী:
দীর্ঘদিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে GBS syndrome নামের দুরারোগ্য রোগের সঙ্গে লড়ে, গতকাল রাত প্রায় ২:৩০ মিনিটে বর্ষা সময়ের মায়ার বন্ধন ছেড়ে চলে গেলেন।
গত বৃহস্পতিবার, কধুরখীল উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৯৮৯ ব্যাচের বন্ধুরা যখন একত্রিত হয়েছিলাম, সেই প্রিয় বিদ্যালয়ে হঠাৎ বর্তমান প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ বড়ুয়া সভার মধ্যে বর্ষার রোগের কথা বর্ণনা করেন। তিনি ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী। তাঁর কথা বলার ধরন, সুন্দর উপস্থাপনা সবাইকে মন মাতিয়ে রাখতো। তিনি ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে শুধু একটি কথা বলেন— বর্ষাকে যেন সৃষ্টিকর্তা দ্রুত সুস্থ করে আমাদের বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে দেয়। সেইদিন আমরা, ১৯৮৯ ব্যাচের সকল সাবেক শিক্ষার্থীরা, যার যার অবস্থান থেকে বর্ষার জন্য কিছু করার অঙ্গিকার বদ্ধ হই।
কিন্তু কিছু করার আগেই বর্ষা সবাইকে কাঁদিয়ে গতকাল রাতেই নাফেরার দেশে চলে গেলেন।
বর্ষাদের বাড়ীর এক কাপড়ের ব্যবসায়ী, রতন সেন, বর্ষা সম্পর্কে বলেন, “বড়ই মিশুক ছিল সেই বর্ষা। প্রতিটি মানুষের সঙ্গে এতো আন্তরিক যে মনে হয় এদের সবাইকে সে বছরের পর বছর ধরে চেনে।”
আজ চঞ্চল মেয়েটিই আমাদের স্মৃতি হয়ে গেল। মানুষতো মরবেই, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এমন মৃত্যু কখনই মেনে নেয়া যায় না। এটা খুবই কষ্টদায়ক। বর্ষার বাবার নাম লিটন সেন। বর্ষার একটি ছোট ভাই আছে। এক ভাই, এক বোনের মধ্যে বর্ষা বড়।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে যখন বর্ষার মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়, সেই সময় এক হৃদয়বিষদায়ক দৃশ্য ঘটে। আত্মীয়স্বজনদের কান্নায় আকাশ ভারী হয়ে ওঠে।
সবাই তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করে, শোকাহত পরিবারের সঙ্গে সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।