মোঃ ফেরদৌস হোসেন:
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন মানুষের জীবনমান উন্নত ও বৈষম্যহীন দেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন, ঠিক তখনই সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাগবাটী ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সোহেল রানা ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনায় রীতিমতো বৈষম্য করছেন।
ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড বাদ রেখে বাকি ওয়ার্ডগুলোতে সরকারি সকল উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন তিনি।
৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ আবু রায়হানের অভিযোগ, তার ওয়ার্ডে কোনো সরকারি প্রকল্প বা সরকারি অনুদান দেওয়া হচ্ছে না, এমনকি ওয়ার্ডের জনগণ সকল সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রশাসনিক কর্মকর্তা সোহেল রানা’র কারণে।
জনমতে প্রশ্ন উঠেছে, ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ আবু রায়হানের সঙ্গে প্রশাসনিক কর্মকর্তার কী বিরোধ যার কারণে এত বৈষম্য হচ্ছে?
জানা যায়, বাগবাটী ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে সদর উপজেলার সমাজসেবা কর্মকর্তা সোহেল রানা দায়িত্ব পাওয়ার পর যথাযথভাবে ইউনিয়নের সকল কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন। সরকারি প্রকল্পগুলো ইউপি সদস্যদের মধ্যে সমানভাবে বণ্টন করছিলেন। হঠাৎ করেই ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু রায়হানকে বাদ দিয়ে বাকি ইউপি সদস্যদের মধ্যে প্রকল্প ও অনুদান বণ্টন শুরু করেন।
এ বিষয়ে বাগবাটী ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ আবু রায়হান বলেন, “আমার ওয়ার্ডের জনগণের মধ্যে কোনো সরকারি প্রকল্প বা অনুদান দিতে পারছি না। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় দুস্থ মানুষের জন্য সরকারি চাউলের কার্ড আমাকে বাদ দিয়ে সব মেম্বারদের দেওয়া হয়েছে। আমাকে একটাও কার্ড দেওয়া হয়নি। আমার ওয়ার্ডের জনগণ কোনো প্রকার চাউলের কার্ড থেকে বঞ্চিত হয়েছে। জনগণকে আমি কী বলব? কয়েকদিন আগে ইউনিয়নে সেলাইমেশিনের বরাদ্দ এসেছিল। সকল মেম্বারদের দুইটি করে দেওয়া হলেও আমার ওয়ার্ডের জনগণের জন্য আমাকে একটাও দেওয়া হয়নি। আমার ওয়ার্ডের মসজিদের রাস্তার অবস্থা খুবই বেহাল, মুসুল্লিরা অনেক কষ্টে নামাজ পড়তে যায়। বারবার চাহিদা জানালেও তা দেওয়া হয়নি। বরং ৬ নং ওয়ার্ডে প্রশাসনিক কর্মকর্তা সোহেল রানা আত্মীয়ের বাড়ির সামনে প্রকল্প দিয়েছেন, যেখানে মাত্র কয়েকটি পরিবার বসবাস করছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমার ওয়ার্ডের জনগণের যাতায়াতের জন্য কিছু রাস্তা পাকা করার খুবই প্রয়োজন, যা করতে পারছি না প্রশাসনিক কর্মকর্তা সোহেল রানার বৈষম্যের কারণে। এর ফলে আমার ওয়ার্ডের জনগণ সরকারি সকল সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।”
অভিযোগের বিষয়ে বাগবাটী ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সোহেল রানা সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, “আপনি যার কথা বলছেন সে তো মেম্বার নয়, সে চেয়ারম্যান। তাকে দেওয়া হবে কিভাবে? আর কারা পেয়েছে তা আপনারা খুঁজে দেখুন। মূলত সে নিজেকে চেয়ারম্যান দাবি করায় আমি তাকে কোনো প্রকল্প দেইনি। যতক্ষণ সে চেয়ারম্যান হিসেবে দাবি রাখবে, ততক্ষণ আমি তাকে কোনো প্রকল্প দেব না।”