স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:
ফিলিস্তিনের গাজা সিটি দখলের ইসরাইলি পরিকল্পনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। সোমবার (১৮ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এই নিন্দা জানান।
ইসরাইলি আগ্রাসনকে “জাতিগত নিধন” আখ্যা
বিবৃতিতে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “ফিলিস্তিনের গাজা সিটি দখলের ন্যক্কারজনক পরিকল্পনার আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। দখলদার ইসরাইল ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়ে গাজা দখলের দিকে এগোচ্ছে। ইতোমধ্যেই গাজা সিটির আল আহলি হাসপাতালে নির্বিচারে বোমা হামলা চালিয়ে ইসরাইলি সেনারা ৭ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে। সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইসরাইলি আগ্রাসনে এ পর্যন্ত ৬১ হাজার ৮২৭ জন ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন এবং ৫৫ হাজার ২৭৫ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।”
তিনি আরও বলেন, ইসরাইলি সেনারা ইতোমধ্যে গাজার ঘরবাড়ি, মসজিদ, মাদ্রাসা, গির্জা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল ধ্বংস করে দিয়েছে। পুরো গাজা আজ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। “একসময়ের সমৃদ্ধ এই নগর আজ মানব ইতিহাসের নির্মমতম ধ্বংসযজ্ঞের সাক্ষী। মূলত ইসরাইল ফিলিস্তিনে পরিকল্পিতভাবে জাতিগত নিধন চালাচ্ছে, যা সভ্য ইতিহাসে নজিরবিহীন এক কলঙ্কজনক অধ্যায়।”
গাজা দখলের নীলনকশা
বিবৃতিতে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অভিযোগ করেন, ইসরাইল সম্প্রতি প্রকাশ্যে গাজা দখলের ঘোষণা দিয়েছে। সেই লক্ষ্যে প্রায় ১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে জোরপূর্বক উচ্ছেদের ভয়াবহ পরিকল্পনা করছে। তিনি বলেন, “গাজা দখলের এ নীলনকশা ইসরাইলি আগ্রাসনের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ— যা আন্তর্জাতিক আইন, মানবাধিকার ও ন্যায়নীতির সম্পূর্ণ পরিপন্থি। ইসরাইলের এ হিংস্র দখলদারিত্ব শুধু ফিলিস্তিনের জন্য নয়, বরং গোটা বিশ্বশান্তি, স্থিতিশীলতা ও মানবতার জন্য গুরুতর হুমকি।”
জাতিসংঘসহ বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান
অধ্যাপক গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, “গাজা সিটি দখল ও ফিলিস্তিনি জনগণকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার এই ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনা অবিলম্বে বন্ধ করতে দখলদার ইসরাইলকে বাধ্য করার জন্য আমি জাতিসংঘ, শান্তিকামী রাষ্ট্র এবং সব আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।”
আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী ও সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা গাজা সিটি দখলের সুস্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন। এরই মধ্যে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ ইসরাইলি আগ্রাসনের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোও গাজায় চলমান হামলাকে “মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ” হিসেবে অভিহিত করছে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেলের এই বিবৃতি মূলত আন্তর্জাতিক মহলের কাছে ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আরও সুসংগঠিত প্রতিবাদ গড়ে তোলার আহ্বান হিসেবে এসেছে।