স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:
“মেধা ও সততায় গড়ব সবার বাংলাদেশ”— এমন শ্লোগান তুলে ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। সোমবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে তিনি এ বক্তব্য পোস্ট করেন।
বেলা ১১টা ৫৬ মিনিটে দেওয়া ওই পোস্টটি দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে এবং কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তা ভাইরাল হয়। অনেকে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন, অনেকে আবার শিবিরের রাজনৈতিক পুনরুত্থান নিয়ে মন্তব্য করেছেন।
ফেসবুকে প্রতিক্রিয়ার ঝড়
জাহিদুল ইসলামের উক্তিকে ঘিরে সমর্থকরা নানা মন্তব্য লিখেছেন।
মোহাম্মদ আলী নামের একজন লিখেছেন—
“এই উক্তিটার সাথে আমিও একমত। যদি এই উক্তি বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলে আগামী ৫০ বছরে আমরা পৃথিবীর সব দিক থেকে শক্তিশালী জাতি হয়ে উঠব।”
ফারিহা শফি নামের এক তরুণী লিখেছেন—
“কি বিচক্ষণ! কি ট্যালেন্ট! কি মিডিয়া ফেস! যেখানে বড় বড় নেতারা সাংবাদিকদের প্রশ্ন এড়িয়ে ধন্যবাদ দিয়ে চলে যান, সেখানে আমাদের ঢাবি শিবির সভাপতিকে প্রশ্ন করে সাংবাদিকরাই ধন্যবাদ দিয়ে চলে যান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন একজন নেতারই প্রয়োজন ছিল এতদিন।”
কবি মাসুম হাসান নজরুলের কবিতার ছন্দে লিখেছেন—
“উহারা প্রচার করুক হিংসা-বিদ্বেষ আর নিন্দাবাদ, আমরা বলিব সাম্য-শান্তি, এক আল্লাহ জিন্দাবাদ।”
সাইফুল্লাহ আল আজাদ নামের আরেকজন লিখেছেন—
“জানবে.. জাগবে.. জাগিয়ে তুলবে… আগামীকাল শিবির ডাকসু নির্বাচনের প্যানেল ঘোষণা করবে। ডাকসু থেকেই ফিনিক্সের মতো শিবির আবার ফিরে আসবে মহাসমারোহে। শহীদ আব্দুল মালেকের রুহানি আত্মা ঢাবির সবুজ চত্বরে দাঁড়িয়ে থাকবে বিজয়ী পতাকা হাতে। চারিদিকে ধ্বনিত হবে— নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার।”
অন্যদিকে হুসাইন ফারাবি নামের এক সমর্থক আরও এগিয়ে লিখেছেন—
“ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ভিপি পদে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির জুলাই বিপ্লবের অন্যতম সংগঠক সাদিক কায়েমকে মনোনয়ন দিয়েছে।”
ডাকসু নির্বাচন ও শিবিরের প্রত্যাবর্তন
প্রতিষ্ঠার পর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনৈতিক কার্যক্রমের অন্যতম ঘাঁটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১৯৭৭ সালে সংগঠনটির জন্ম ঢাবি কেন্দ্রীয় মসজিদে। অনেকের মতে, দীর্ঘদিন রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও সহিংসতায় পিছিয়ে থাকা শিবির ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আবারও নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা করছে।
সমর্থকদের বক্তব্যে উঠে এসেছে, ডাকসু নির্বাচনের প্রচারণাকে তারা শুধু ছাত্ররাজনীতির নয়, বরং এক ধরনের “আধ্যাত্মিক পুনর্জাগরণ” হিসেবে দেখছেন।
বিশ্লেষকদের মত
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ছাত্রশিবিরের এই নতুন প্রচারণা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয়তা তাদের সাংগঠনিক শক্তি প্রদর্শনের কৌশল হতে পারে। তবে বাস্তবে ডাকসু নির্বাচনে তারা কতটা প্রভাব ফেলতে পারবে, তা নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে।
উপসংহার
জাহিদুল ইসলামের “মেধা ও সততায় গড়ব সবার বাংলাদেশ” উক্তিটি ইতিবাচক বার্তা হলেও এর সঙ্গে জুড়ে যাচ্ছে রাজনৈতিক বিতর্ক। সমর্থকরা একে ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের প্রতীকী ঘোষণা হিসেবে দেখছেন, আবার সমালোচকদের মতে, এটি কেবলই একটি রাজনৈতিক প্রচারণা।
এখন দেখার বিষয়—ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু নির্বাচন শিবিরের জন্য কতটা সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করে, নাকি অতীতের মতোই তাদের সীমাবদ্ধতার মুখোমুখি হতে হয়।