স্টাফ রিপোর্টার:
রাজধানীর উত্তরা মডেল টাউনের ৫ নম্বর সেক্টরে রাজউকের খালি একটি প্লট দখলের অভিযোগ উঠেছে ড. নাসিমা এ রহমানের বিরুদ্ধে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে বসবাসরত একটি শ্রমিক পরিবারকে সুকৌশলে উচ্ছেদ করে প্লটটি নিজের দখলে নেন।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, পাকাপোক্ত লোহার গেট ও কংক্রিটের দেয়াল দিয়ে প্লটটি ঘিরে রাখা হয়েছে। যেন একেবারেই মালিকানা প্রতিষ্ঠার প্রস্তুতি চলছে। এলাকাবাসীর ভাষ্য— ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে প্লটটি দখল করা হয়েছে।
পরিচয় ও পটভূমি
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ড. নাসিমা এ রহমান হলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলামের দ্বিতীয় স্ত্রী। সে সুবাদে তিনি উত্তরার ৯/এ রোডের ৩৯ নম্বর বাসায় বসবাস শুরু করেন। স্বামীর পরিচিতি কাজে লাগিয়ে তিনি এলাকায় বেশ প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন।
বসবাসরত একটি শ্রমজীবী পরিবার— রফিক, কামাল, ইসমাইলসহ ছয় ভাইয়ের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা ছিল। তাদের মাধ্যমেই তিনি জানতে পারেন যে, ৯/বি রোডের ৫৪ নম্বর প্লটটির কোনো মালিক নেই। পরবর্তীতে একটি অ্যাডভোকেটের মাধ্যমে পরিবারটিকে হুমকি–ধমকি দেন। তাতেও কাজ না হলে নগদ অর্থ দিয়ে তাদের সরে যেতে বাধ্য করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয়দের বক্তব্য
স্থানীয়দের দাবি, সেখানে বহু বছর ধরে একজন জৈনিক ব্যক্তি তার ছয় ছেলে ও মেয়ে জামাই নিয়ে বসবাস করতেন। পরবর্তীতে কিছু অর্থের বিনিময়ে তারা জায়গাটি খালি করে দেন। তবে অর্থ ভাগাভাগি নিয়েও তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়।
অভিযোগ রয়েছে, প্লটটি দখল করার পর ড. নাসিমা প্রথমে এবি ব্যাংকের নামে একটি নোটিশ বোর্ড টাঙান। পরে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী পরিচয়ে একটি নিষেধাজ্ঞার কাগজ টাঙিয়ে দেন। এমনকি তিনি জায়গার একটি ফলজ গাছও কেটে ফেলেন।
একজন স্থানীয় বলেন, “তিনি আচরণে অত্যন্ত প্রভাবশালী। সাধারণ মানুষের সঙ্গে তেমন কথা বলেন না, আইনজীবী পরিচয় আর টাকার জোরেই সব করছেন।”
কল্যাণ সমিতি ও রাজউকের অবস্থান
উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টর কল্যাণ সমিতির এক দায়িত্বশীল ব্যক্তি জানান, “যারা আগে ছিল তারাও বৈধ ছিল না। ক্ষতিপূরণ দিয়ে তাদের সরানো হয়েছে। এখন নতুন করে যারা এল তারা কীভাবে জায়গাটি দখল করল, তা তদন্ত করা প্রয়োজন।”
রাজউক সূত্র জানায়, উক্ত প্লটটি এখনো বরাদ্দহীন। অর্থাৎ প্লটটির মালিক রাজউক নিজেই।
প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি
ড. নাসিমা এ রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে একাধিকবার মোবাইলে ফোন করা হলেও সাড়া মেলেনি। সরেজমিনে প্লটে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।