স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:
অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিশ্চিত করতে হলে দক্ষ ও কর্মক্ষম মানবসম্পদ গড়ে তোলা জরুরি। তিনি জোর দিয়ে বলেন, যতো প্রতিকূল পরিস্থিতিই হোক না কেন, সুস্থ ও সবল প্রজন্ম তৈরি করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
বুধবার (২০ আগস্ট) সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আয়োজিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সহযোগিতা বৃদ্ধির নিমিত্ত ‘যৌথ ঘোষণাপত্র’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এসময় দেশের ৩৫টি মন্ত্রণালয়ের অংশগ্রহণে অসংক্রামক রোগ (এনসিডি) প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে একটি গুরুত্বপূর্ণ যৌথ ঘোষণাপত্র স্বাক্ষরিত হয়।
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “স্বাস্থ্য খাতের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়েই আজ আমরা একত্রিত হয়েছি। জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিশ্চিত করতে হলে দক্ষ ও কর্মক্ষম মানবসম্পদ গড়ে তোলা অপরিহার্য। এ মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে না পারলে ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে জাতীয় উন্নয়ন—কোনোটিই যথাযথভাবে সম্ভব নয়।”
তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই অসংক্রামক রোগ দ্রুত বিস্তার লাভ করছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিষয়টি আরও সংকটময় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, আমাদের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি, ভৌগোলিক অবস্থা এবং সীমিত এলাকায় বিপুল জনগোষ্ঠীর বসবাস এ সমস্যাকে বাড়িয়ে তুলছে। তাই এটি এখন জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর একটি। বিষয়টি কেবল স্বাস্থ্য খাতের সঙ্গে সীমাবদ্ধ নয়; বরং আমাদের সামগ্রিক অর্থনীতি, সামাজিক নিরাপত্তা ও টেকসই উন্নয়নের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) ২০২২ সালের প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর ৭১ শতাংশ ঘটে থাকে অসংক্রামক রোগের কারণে। এর মধ্যে ৫১ শতাংশ মানুষ মারা যান ৭০ বছর বয়সের আগেই, যাকে অকাল মৃত্যু হিসেবে ধরা হয়। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হচ্ছে, ব্যক্তিগত চিকিৎসা ব্যয়ের (আউট অব পকেট এক্সপেন্ডিচার) প্রায় ৬৯ শতাংশই অসংক্রামক রোগের চিকিৎসায় ব্যয় হয়।”
তিনি বলেন, অসংক্রামক রোগের চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন যেমন জরুরি, তেমনি এই রোগগুলো যেন কম হয় বা একেবারেই না হয়—তার জন্য উপযুক্ত জনসচেতনতা, প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। “শুধু স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ একা এটা করতে পারবে না। এজন্য সব মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত সহযোগিতা প্রয়োজন,” যোগ করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা খাদ্য, কৃষি, শিক্ষা, ক্রীড়া, স্থানীয় সরকার ও গণপূর্তসহ বিভিন্ন খাতের ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, “প্রতিটি খাতের দায়িত্ব ও করণীয় সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এখন দরকার প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে স্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও তার বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া।”