ময়মনসিংহ বিআরটিএতে দালাল সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রক সহকারী পরিচালক আবু নাঈম

স্টাফ রিপোর্টার: 

ময়মনসিংহ সার্কেল বিআরটিএ অফিসে দালালের মাধ্যমে ঘুষ ছাড়া কোনো সেবা পাওয়া যায় না—এমন অভিযোগ নতুন নয়। সেবাগ্রহীতাদের জিম্মি করে দীর্ঘদিন ধরে ঘুষ বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে একটি প্রভাবশালী দালাল চক্র। আর এই চক্রকে মদদ দিয়ে আসছেন অফিসের সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি.) মোঃ আবু নাঈম।

দালালের দৌরাত্ম্য

অভিযোগ রয়েছে, ঘুষ ছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্স নতুন করা বা রিনিউ করানো সম্ভব নয়। দালালদের টাকা দিলে পরীক্ষা ছাড়াই অথবা নামমাত্র পরীক্ষায় পাশ দেখানো হয়। আর যারা দালালকে ঘুষ দিতে অস্বীকৃতি জানায়, তাদের ফেল দেখিয়ে আবার দালালের দ্বারস্থ হতে বাধ্য করা হয়।
এক ভুক্তভোগী জানান, “দুইবার ভালো পরীক্ষা দেওয়ার পরও আমাকে ফেল দেখানো হয়। কারণ আমি দালালকে টাকা দিইনি। কিন্তু টাকা দেওয়ার সাথে সাথেই নামমাত্র পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

আবু নাঈমের মদদ ছাড়া কিছু হয় না

অফিসের পরিদর্শকরা পর্যন্ত সহকারী পরিচালক মোঃ আবু নাঈমের নির্দেশ ছাড়া কোনো কাজ করতে পারেন না। অভিযোগ আছে, তিনি নিজেই দালালদের লালন-পালন করেন এবং তাদের মাধ্যমে ঘুষ বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করেন। ফলে সাধারণ মানুষ অসহায় হয়ে পড়ছে।

দুর্নীতি ও অস্বাভাবিক সম্পদ

দুদকের একাধিক অভিযানে দালাল ধরা পড়লেও কর্মকর্তারা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছেন। সূত্রে জানা যায়, সহকারী পরিচালক মোঃ আবু নাঈমের ঢাকায় রয়েছে বিলাসবহুল একাধিক ফ্ল্যাট, নামে-বেনামে জমি ও বিপুল সম্পদ। তার স্ত্রী ও ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের সম্পদের পরিমাণও প্রশ্নবিদ্ধ।
তবে এসব অভিযোগকে এড়িয়ে গিয়ে তিনি দাবি করেন, “দালাল আছে তবে এখন কমে গেছে। কাজ করতে গেলে ভালো-মন্দ হবেই।”

ব্যবস্থা কোথায়?

অভিযোগ রয়েছে, শুধু দালাল চক্র নয়, জড়িত কর্মকর্তাদের তালিকাও তৈরি করে দুদকে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে দালাল ও কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ঘুষ বাণিজ্য অব্যাহত রয়েছে।

সাধারণ মানুষের দাবি, ময়মনসিংহ বিআরটিএতে সহকারী পরিচালক মোঃ আবু নাঈম ও তার চক্রের বিরুদ্ধে দুদককে দ্রুত সুনির্দিষ্ট তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *