মোঃ জাহাঙ্গীর আলম:
মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর উপজেলার পয়লা ইউনিয়নের চর বাইলজুরি মৌজার শ্রীধরনগর গ্রামে প্রস্তাবিত একটি বালুমহাল বন্ধের দাবিতে এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছেন। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সকাল ১০টায় শ্রীধরনগর ৪৬ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে ধলেশ্বরী নদীর পাড় পর্যন্ত প্রায় পাঁচ শতাধিক মানুষ মানববন্ধনে অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ আকরাম প্রধান। তিনি বলেন, “বালুমহালের কারণে আমার প্রায় ৭ বিঘা জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হুমকির মুখে রয়েছে। তাই আমরা বালুমহাল বন্ধ চাই।”
শ্রীধরনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাখী আক্তার বলেন, “আমাদের বিদ্যালয় নদীর মাত্র ১০০ গজ দূরে। নতুন ভবন নির্মাণাধীন রয়েছে, যা যেকোনো সময় নদীগর্ভে চলে যেতে পারে। এতে সরকার ও জনগণের বড় ধরনের ক্ষতি হবে।”
পয়লা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, “শ্রীধরনগরে প্রস্তাবিত বালুমহাল নীতিমালা অনুযায়ী নয়। নদীর ১০০ গজ দূরত্বে রয়েছে মসজিদ, কবরস্থান, মাদ্রাসা ও বিদ্যালয়। তাই এ বালুমহাল চালু হলে আশপাশের গ্রামগুলো ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। আমরা বালুমহাল বন্ধের জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”
মানববন্ধন চলাকালে বিক্ষুব্ধ জনতা বালুমহালের জন্য প্রস্তুত করা বাল্কহেড ও বাঁশের খুঁটি নদীতে ভাসিয়ে দেন। পরে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া স্থানীয়রা পয়লা সাকিনস্থ পয়লা মোড়ে স্লোগান দিতে দিতে পয়লা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে অবস্থান নেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়।
এলাকাবাসীর আশঙ্কা:
স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত বালুমহালের নিকটবর্তী শ্রীধরনগর, বেগুন নারচী, শোলাকোরিয়া, বাসুদেব বাড়ি, সিধুগঞ্জ ও সিধুনগর গ্রাম অতীতে ভয়াবহ নদীভাঙনের শিকার হয়েছে। ধলেশ্বরী নদীর তীরবর্তী এসব এলাকায় রয়েছে শতাধিক পরিবারের বসতবাড়ি, শ্রীধরনগর ৪৬ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বেগুন নারচী ৫৯ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান ও বিস্তীর্ণ ফসলি জমি। এ অবস্থায় বালুমহাল চালু হলে এগুলো বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
সম্প্রতি নদীভাঙনে বিলীন হওয়া পূর্ব বেগুন ৫৯ নং বেগুন নারচী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নতুন করে নির্মিত হলেও সেটিও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। শিক্ষার্থীদের এখনও কৃষিজমি পেরিয়ে কষ্ট করে যাতায়াত করতে হয়।
এ বিষয়ে ঘিওর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাতিশা তুল ইসলাম বলেন, “প্রস্তাবিত বালুমহাল নির্দিষ্ট সীমানার বাইরে কাটার কোন সুযোগ নেই।”