চসিক কমিশনার হাসিবের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারের অভিযোগ

কামরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম:

চট্টগ্রামের কিছু সংবাদমাধ্যমে পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজকে কেন্দ্র করে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ধরনের অপপ্রচারের মাধ্যমে কমিশনার হাসিবের প্রতি সাংবাদিক মহলে ভুল ধারণা সৃষ্টি হচ্ছে।

সম্প্রতি একটি জাতীয় টেলিভিশনের প্রতিবেদনের পর বিভিন্ন মহলে দাবি করা হয়েছে যে, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার সাংবাদিকদের হুমকি দিয়েছেন। তবে প্রতিবেদনে কোন টেলিভিশনের নাম উল্লেখ করা হয়নি, যা বিষয়টিকে কাল্পনিক দাবি হিসেবে তুলে ধরে।

একই দিনে ডবলমুরিং থানায় দায়িত্ব পালনকালে দুই সাংবাদিককে হয়রানি ও একজনকে আটক করার অভিযোগও ওঠেছে। তবে এ ঘটনায় যথাযথ প্রমাণ এখনও প্রকাশিত হয়নি।

চ্যানেল ২৪-এর সিনিয়র প্রতিবেদক এমদাদুল হক ১৯ আগস্ট চট্টগ্রামে ব্যাটারিচালিত রিকশার টোকেন বাণিজ্য নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করলে দেখা গেছে, কিছু পুলিশ সদস্য ও কিছু সাংবাদিক এই অবৈধ টোকেন বাণিজ্যে অর্থের বিনিময়ে লিপ্ত। তবে সরকারি কোষাগারে অর্থ জমা না দিয়ে তা ব্যক্তিগতভাবে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

প্রতিবেদন প্রসঙ্গে কমিশনার হাসিব আজিজ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এটিকে “মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত” বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি জানান, পুলিশ লাইনে প্রবেশ করতে সকলকে ডিউটি অফিসারের অনুমতি নিতে হয়, এবং মানবিক কারণে সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে অনেক সময় শিথিলতা রাখা হয়। তিনি সতর্ক করেছেন যে, প্রমাণ বা ডকুমেন্টারি ছাড়া কোন সংবাদ প্রচার করলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে প্রতিবেদক এমদাদুল হক বলেন, “সংবাদের সবকিছুই সত্য। আমার কাছে যথেষ্ট প্রমাণ আছে।” তবে সচেতন মহল ও কিছু পক্ষ সাংবাদিক ও পুলিশ সম্পর্কিত অভিযোগের সত্যতা নিয়ে সন্দিহান।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান বলেন, “আমরা পুলিশের এই আচরণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। বিষয়টি উচ্চ পর্যায়ে জানানো হয়েছে এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সবুর শুভ বলেন, “একজন পেশাদার পুলিশ কর্মকর্তা এ ধরনের ভাষা ব্যবহার করা ঠিক নয়। আশা করি কমিশনার তার বক্তব্য প্রত্যাহার করবেন।”

ডবলমুরিং থানার সামনে সংবাদ সংগ্রহের সময় দৈনিক আজকের পত্রিকার মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার আব্দুল কাইয়ুম এবং যায়যায়দিন পত্রিকার সাংবাদিক মো. মাসুম হয়রানির শিকার হয়েছেন। অভিযোগ, সাংবাদিক পরিচয় সত্ত্বেও ওসি বাবুল আজাদ তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন। মো. মাসুমকে ২০ মিনিটের জন্য লকআপে আটক করা হয়। মো. মাসুম বলেন, “পোশাক শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ লাইভ করার সময় ওসি আমাকে গালাগালি করেছেন এবং থানায় আটকে রাখেন।”

পুলিশের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি পাওয়া যাননি। তবে পুলিশের মুখপাত্র মাহমুদা বেগম জানিয়েছেন, ডবলমুরিংয়ের ঘটনায় ডিসি উপস্থিত থেকে বিষয়টি সমাধান করেছেন।

সাংবাদিক মহল মনে করছে, পুলিশের এই আচরণ সাংবাদিকতার স্বাধীনতার ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপ। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, হুমকি দিয়ে বিবৃতি দেওয়া ও সংবাদকর্মীদের মাঠে আটক করা গণমাধ্যমের জন্য উদ্বেগজনক বার্তা সৃষ্টি করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *