সোশ্যাল মিডিয়ায় পুরুষদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছেন আফরোজা আক্তার শারমিনের বিরুদ্ধে

জীবন খান/ইউসুফ সরকার

রাজধানীর গুলশান, বারিধারা, বনানী এবং কক্সবাজার এর বিভিন্ন অভিজাত হোটেলে নিয়ে এসে তাদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে। পুরুষদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে গুলশান স্পা সেন্টারে কর্মরত দেহ ব্যাবসায়ী আফরোজা আক্তার শারমিনের বিরুদ্ধে।
হোল্ডিং: ৫১, গ্রাম/বান্তা: শান্তিরকান্দা, রতনপুর, ডাকঘর: দিলালপুর-২০০৬ থানাঃ বাজিতপুর জেলাঃকিশোরগঞ্জের মোঃ নজরুল মিয়া ও মোছাঃ সাহিয়া এর কন্যা আফরোজা আক্তার শারমিন। অনুসন্ধানে পাওয়া যায় আফরোজা আক্তার শারমিন সমাজের বিত্তশালী,ব্যবসায়ী,উর্ধতন চাকুরীজীবী কে টার্গেট করে ফেসবুক,মেসেঞ্জার,
টিকটক সহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক আইডি ব্যবহার করে তাদেরকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করেন এবং তাদের সাথে সুসম্পর্ক করার মাধ্যমে যোগাযোগ করে রাজধানীর গুলশান, বারিধারা, বনানী এবং কক্সবাজার এর বিভিন্ন অভিজাত হোটেলে নিয়ে এসে তাদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে তাদের সেই অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। আফরোজা আক্তার শারমিন এর সাথে রয়েছে বিশাল একটি চক্র।নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ভূক্তভোগী জানান,প্রথমে তাদেরকে বিভিন্ন ছলে তার স্পা সেন্টার ও গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসেন এবং তার সহযোগী চক্র মোবাইল ফোনের অশালীন ভিডিও দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা দাবি করেন। তখন তারা যদি অস্বীকার করে তাদের উপরে চালানো হয় শারীরিক মানসিক নির্যাতন। আরো জানা যায়, এই চক্র ভুক্তভোগীদের ৩০০ টাকার নন জুডিশিয়াল ব্ল্যাংক স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেয়। তারপর তাদেরকে মামলা ও সামাজিক হেনস্তার ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, এই আফরোজা আক্তার শারমিন বিদেশে মদের বারে চাকরি করতেন। সেখানেও সে দেহ ব্যবসা করতেন। বিদেশ থেকে দেশে আসার পরে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার জেসমিন নামের এক বান্ধবীর সাথে পরিচয় হয়। উক্ত বান্ধবী তাকে সমাজের বৃত্তশালী,ব্যবসায়ী,চাকরিজীবীর সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে তাদের সাথে অনৈতিক কার্যক্রমে সহায়তা করেন। অনৈতিক কার্যকলাপের মাধ্যমে ব্ল্যাকমেইলের সাথে তার মা,খালা সহ তার বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী জড়িত।

আরো জানা যায়, আফরোজা আক্তার শারমিন প্রথমে একটি বিবাহ করে। যখন তার স্বামী তার এই দেহ ব্যবসার কথা জানতে পারে তখন তাকে ডিভোর্স দেয়। ডিভোর্সের পরবরর্তীতে পরপর কয়েকটি নামমাত্র বিবাহ করে একজনের সাথেও সে সংসার করেনি। এই স্বামীদের সাইনবোর্ড হিসেবে ব্যবহার করে আয় করে যাচ্ছে তার অসামাজিক কার্যকলাপ এর মাধ্যমে বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যাবসায়ী এবং কিছু সরকারী আমলাদের জিম্মি করে কোটি কোটি টাকা ।
এজন্য সে ব্যবহার করছে একাধিক নামের টিকটক আইডি। প্রতিনিয়ত সকালে তার বিভিন্ন সোসিয়াল মিডিয়ার আইডির নাম পরিবর্তন করে নতুন নতুন আইডি ভিন্ন ভিন্ন নাম ব্যবহার করে চলছে প্রতারণার নতুন ফাঁদ।
আফরোজা আক্তার শারমিনকে সহযোগিতা করছে কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তা,একাধিক মাদক ব্যবসায়ী,কথিত ভূইফোড় সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। তারা মাসিক চাঁদা গ্রহণের মাধ্যমে তার দেহ ব্যবসা চালিয়ে যেতে সহযোগিতা করছেন।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী বলেন আমাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে,সে গুলশানের একটি বাড়িতে নিয়ে এসে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমার কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

এ বিষয়ে শারমিনের জন্মস্থান কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর থানার শান্তিরকান্দা রতনপুর গ্রামের একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বললে তারা জানান,শারমিনের এই কৃতকর্মের কারণে তার প্রথম স্বামী তাকে তালাক দেয়।এরপর সে আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে ওঠে।তার সম্পর্কে মুখ খুললে সে,তার মা এবং তার খালা সহ সন্ত্রাসী বাহিনী এতোটাই ভয়ংকর যে, আমাদের নামে মামলা হামলা সহ বিভিন্ন ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন তার একাধিক বিয়ে রয়েছে, এছাড়া শারমিন এর এলাকায়ও একটি সন্ত্রাসী গ্যাং রয়েছে,সে বিভিন্ন সময় তাদের দিয়ে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন।তবে তার ব্যাপারে স্থানীয় রাজনৈতিক সামাজিক ব্যক্তি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কেনো নীরব এনিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন তিনি।

উক্ত আফরোজা আক্তার শারমিনের কারণে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীপেশার ব্যক্তি থেকে শুরু করে সকল শ্রেণীর লোক অশালীন কার্যক্রমের সাথে জড়িত হয়ে যাচ্ছে এবং প্রতারিত ও হেনস্তার শিকার হচ্ছেন। তাই সুশীল সমাজ এই ভয়ংকর দেহ ব্যবসায়ী চক্র থেকে সমাজকে মুক্ত করার দাবি জানায় এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে সহযোগিতার মাধ্যমে তাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

তার বিরুদ্ধে অভিযোগের ব্যাপারে জানতে আফরোজা আক্তার শারমিনের সাথে কথা বলতে গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।পরবর্তীতে হোয়াটসঅ্যাপে কথোপকথন হয় এবং কথোপকথন এর সময় আফরোজাকে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের ব্যাপারে মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার বিরুদ্ধে কে বা কারা অভিযোগ করেছে সেটা আমার জানা নাই।গুলশানে স্পা সেন্টারে যাওয়ার ব্যাপারে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে হুমকি দিয়ে ফোন কেটে দেন।
এ বিষয়ে বাজিতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোঃ মুরাদ হোসেন মুঠোফোনে বলেন,আফরোজা আক্তার শারমিনের ব্যাপারে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে বিষয়টি আমলে নিবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *